ক্যান্সার একটি প্রাণঘাতী রোগ যা শরীরের কোষগুলোর অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে সৃষ্টি হয়। স্বাভাবিকভাবে, শরীরের কোষ নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসারে বিভাজিত হয় এবং এক পর্যায়ে বৃদ্ধিও থেমে যায়। কিন্তু ক্যান্সার হলে এই কোষ বিভাজনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া নষ্ট হয়ে যায় এবং অনিয়ন্ত্রিতভাবে কোষ বৃদ্ধি পায়, যা টিউমার সৃষ্টি করতে পারে।
ক্যান্সারের কারণসমূহ:
ক্যান্সারের সুনির্দিষ্ট কারণ নির্ণয় করা কঠিন হলেও কিছু ঝুঁকিপূর্ণ কারণ রয়েছে। যেমন:
১. জিনগত কারণ: পরিবারের পূর্ববর্তী প্রজন্মে ক্যান্সারের ইতিহাস থাকলে ঝুঁকি বেড়ে যায়।
২. ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য: তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের ফলে ফুসফুস, মুখ, গলা ও অন্যান্য অঙ্গের ক্যান্সারের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
৩. অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: অতিরিক্ত চর্বি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
৪. পরিবেশ দূষণ: বায়ু ও পানি দূষণ থেকে ক্ষতিকারক রাসায়নিক উপাদান শরীরে প্রবেশ করে ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
৫. অ্যালকোহল গ্রহণ: অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান লিভার ও অন্যান্য অঙ্গের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
৬. ভাইরাস ও সংক্রমণ: কিছু ভাইরাস সংক্রমণ, যেমন হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (HPV) ও হেপাটাইটিস বি, ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
৭. রেডিয়েশন: অতিরিক্ত সূর্যালোক বা এক্স-রে ও রেডিয়েশন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায়:
যদিও ক্যান্সার পুরোপুরি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়, তবে কিছু সতর্কতা গ্রহণ করলে ঝুঁকি কমানো যেতে পারে। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, সুষম খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার করা, এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।
প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার শনাক্ত করা গেলে চিকিৎসা সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। তাই, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা এবং শরীরে কোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তন লক্ষ্য করলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
লেখকঃ
ডা. বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য্য
সিনিয়র কনসালটেন্ট ও কোঅর্ডিনেটর
রেডিয়েশন অনকোলজি
এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা।