ইলেক্ট্রোমায়োগ্রাফি বা সংক্ষেপে ইএমজি হল একটি চিকিৎসা পরীক্ষা যা আমাদের পেশী ও স্নায়ুর স্বাস্থ্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেয়। এই পরীক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসকরা বিভিন্ন ধরনের পেশী ও স্নায়ুর সমস্যা যেমন, পেশীর দুর্বলতা, অসাড়তা, ঝিনঝিনানি ইত্যাদির কারণ খুঁজে বের করতে পারেন।
ইএমজি কেন করা হয়?
- পেশী ও স্নায়ুর সমস্যা নির্ণয়: পেশীর দুর্বলতা, অসাড়তা, ঝিনঝিনানি, পেশীতে ব্যথা, পেশী কাঁপুনি ইত্যাদি সমস্যার কারণ খুঁজে বের করতে।
- নার্ভ ডিজিজ: নার্ভ ডিজিজ যেমন, মায়াস্থেনিয়া গ্রাভিস, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস, মায়োপ্যাথি ইত্যাদি রোগ নির্ণয় করতে।
- পেশী বা স্নায়ুর আঘাতের মূল্যায়ন: কোনো আঘাতের পর পেশী বা স্নায়ু কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা জানতে।
- পেশী বা স্নায়ুর অস্ত্রোপচারের পর মূল্যায়ন: অস্ত্রোপচারের পর পেশী বা স্নায়ুর কার্যকলাপ কতটা স্বাভাবিক হয়েছে তা জানতে।
ইএমজি পরীক্ষা কিভাবে করা হয়?
ইএমজি পরীক্ষার সময় চিকিৎসক একটি ছোট সুই পেশিতে ঢুকিয়ে পেশীর বিদ্যুৎ সিগন্যাল রেকর্ড করেন। এই সিগন্যালগুলো একটি কম্পিউটারে প্রদর্শিত হয়। পরীক্ষার সময় রোগীকে বিভিন্ন পেশীকে সংকুচিত করতে বলা হয়।
ইএমজি পরীক্ষার আগে
- পরীক্ষার আগে চিকিৎসকের নির্দেশাবলী ভালোভাবে অনুসরণ করতে হবে।
- পরীক্ষার আগে মাথা ধোয়া এবং কোনো ধরনের তেল বা জেল ব্যবহার না করা উচিত।
- পরীক্ষার আগে কফি, চা বা অন্যান্য ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলা উচিত।
- পরীক্ষার আগে কোনো ধরনের ওষুধ খাওয়ার বিষয়ে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
ইএমজি পরীক্ষার পর
পরীক্ষার পর কিছুক্ষণের জন্য পেশীতে ব্যথা বা কোমর হতে পারে। এই ব্যথা সাধারণত কয়েক ঘন্টার মধ্যে চলে যায়।
ইএমজি পরীক্ষার ফলাফল
ইএমজি পরীক্ষার ফলাফল থেকে চিকিৎসকরা নিম্নলিখিত তথ্য পেতে পারেন:
- পেশী কতটা শক্তিশালী
- স্নায়ু কতটা দ্রুত সংকেত পাঠায়
- পেশী ও স্নায়ুর মধ্যে সংযোগ কতটা ভালো
- পেশীতে কোনো অস্বাভাবিক কার্যকলাপ আছে কি না
ইএমজি পরীক্ষার সুবিধা
- ইএমজি একটি অতিরিক্ত নিরাপদ এবং ব্যথাহীন পরীক্ষা।
- ইএমজি-এর মাধ্যমে পেশী ও স্নায়ুর বিভিন্ন রোগ সহজে নির্ণয় করা যায়।
- ইএমজি-এর মাধ্যমে পেশী ও স্নায়ুর কার্যকলাপের পরিবর্তন সময়ের সাথে সাথে পর্যবেক্ষণ করা যায়।
মনে রাখবেন: ইএমজি একটি চিকিৎসা পরীক্ষা। তাই, এই পরীক্ষা করানোর আগে একজন নিউরোলজিস্টের পরামর্শ অত্যন্ত জরুরী।