কিডনি টিউমার হল কিডনির কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। এই বৃদ্ধি সৌম্য (নন-ক্যান্সারাস) বা মারাত্মক (ক্যান্সারাস) হতে পারে। যদিও কিছু কিডনি টিউমার সৌম্য এবং প্রাণঘাতী নয়, অন্যগুলো ম্যালিগন্যান্ট হতে পারে, যা আরও গুরুতর অবস্থার দিকে পরিচালিত করে।
কিডনি টিউমারের কারণ
কিডনি টিউমারের সঠিক কারণ সবসময় জানা যায় না। তবে কিছু কারণ হতে পারে:
- বয়স: বৃদ্ধ বয়সে কিডনি ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি থাকে।
- ধূমপান: ধূমপান কিডনি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
- স্থূলতা: অতিরিক্ত ওজন কিডনি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
- উচ্চ রক্তচাপ: উচ্চ রক্তচাপ কিডনি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
- পরিবারে ক্যান্সারের ইতিহাস: পরিবারে যদি কিডনি ক্যান্সারের ইতিহাস থাকে তাহলে ঝুঁকি বাড়তে পারে।
কিডনি টিউমারের লক্ষণ
প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনি টিউমারের কোনো লক্ষণ নাও থাকতে পারে। যখন লক্ষণ দেখা দেয় তখন সেগুলি হতে পারে:
- মূত্রে রক্ত: প্রস্রাবে রক্ত দেখা দেওয়া কিডনি টিউমারের একটি সাধারণ লক্ষণ।
- পাশে ব্যথা: পেটের পাশে বা পিঠের নিচের দিকে ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
- পেটে গ้อน: পেটে একটি গ้อน অনুভূত হতে পারে।
- ওজন কমে যাওয়া: কোনো কারণ ছাড়া ওজন কমে যাওয়া।
- জ্বর: দীর্ঘস্থায়ী জ্বর।
- অরুচি: খাবারে রুচি না থাকা।
- অনেক পরিমাণে প্রস্রাব করা বা রাতে বারবার প্রস্রাবে যাওয়া।
কিডনি টিউমারের রোগ নির্ণয়
কিডনি টিউমারের রোগ নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়, যেমন:
- মূত্র পরীক্ষা: মূত্রে রক্ত বা অন্যান্য অস্বাভাবিকতা খুঁজতে।
- আল্ট্রাসাউন্ড: কিডনির ছবি তোলা।
- সিটি স্ক্যান: কিডনির বিস্তারিত ছবি তোলা।
- এমআরআই: কিডনির বিস্তারিত ছবি তোলা।
- বায়োপ্সি: টিউমারের একটি ছোট টুকরো নিয়ে পরীক্ষা করা।
কিডনি টিউমারের চিকিৎসা
কিডনি টিউমারের চিকিৎসা টিউমারের ধরন, আকার, অবস্থান এবং রোগীর সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে। চিকিৎসার বিকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে:
- সার্জারি: টিউমার অপসারণ করা।
- কিমোথেরাপি: ওষুধের মাধ্যমে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা।
- বিকিরণ থেরাপি: বিকিরণের মাধ্যমে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা।
- লক্ষ্যযুক্ত থেরাপি: ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করার জন্য বিশেষ ওষুধ ব্যবহার করা।
কিডনি টিউমার প্রতিরোধ
কিডনি টিউমার প্রতিরোধের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা গুরুত্বপূর্ণ। এতে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে:
- সুষম খাদ্য গ্রহণ করা: ফল, সবজি এবং পুরো শস্য খাবার বেশি খাওয়া।
- নিয়মিত ব্যায়াম করা:
- স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা:
- ধূমপান বন্ধ করা:
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা:
- নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া:
মনে রাখবেন: কিডনি টিউমার একটি গুরুতর রোগ। তাই, যদি আপনার কিডনি টিউমারের কোনো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।