আমাদের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল কিডনি। এই অঙ্গটি আমাদের রক্তকে পরিশুদ্ধ করে, অতিরিক্ত পানি ও বিষাক্ত পদার্থকে বের করে দেয়। কিন্তু, বিভিন্ন কারণে কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনি রোগের লক্ষণ খুব কমই বোঝা যায়, তাই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি।
কেন নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করানো উচিত?
- প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয়: অনেক সময় কিডনি রোগের লক্ষণ খুব কমই বোঝা যায়। নিয়মিত পরীক্ষা করলে এই সমস্যাগুলো প্রাথমিক পর্যায়েই ধরা পড়ে।
- সময়মতো চিকিৎসা: প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ ধরা পড়লে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া যায়। এতে রোগের অগ্রগতি রোধ করা সম্ভব হয়।
- জীবনযাত্রার মান উন্নতি: কিডনি রোগ যদি গুরুতর হয়ে যায়, তাহলে জীবনযাত্রার মান কমে যায়। নিয়মিত পরীক্ষা করে এই সমস্যা এড়ানো যায়।
কোন কোন পরীক্ষা করানো উচিত?
- রক্ত পরীক্ষা: রক্তের ক্রিয়েটিনিন এবং ইউরিয়া নাইট্রোজেনের মাত্রা পরীক্ষা করে কিডনির কার্যক্ষমতা মূল্যায়ন করা হয়।
- মূত্র পরীক্ষা: মূত্রে প্রোটিন, রক্ত কোষ বা অন্যান্য অস্বাভাবিক উপাদানের উপস্থিতি পরীক্ষা করা হয়।
- আল্ট্রাসাউন্ড: কিডনির আকার, আকৃতি এবং অভ্যন্তরীণ গঠন পরীক্ষা করার জন্য আল্ট্রাসাউন্ড করা হয়।
কাদের নিয়মিত পরীক্ষা করানো উচিত?
- ডায়াবেটিস রোগীরা: ডায়াবেটিস কিডনি রোগের একটি প্রধান কারণ।
- উচ্চ রক্তচাপ রোগীরা: উচ্চ রক্তচাপও কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
- পরিবারে কিডনি রোগের ইতিহাস থাকলে: পারিবারিক ইতিহাস কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
- অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা থাকলে: স্থূলতা কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
- অতিরিক্ত ব্যথানাশক ওষুধ সেবনকারীরা: কিছু ব্যথানাশক ওষুধ কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
কত ঘন ঘন পরীক্ষা করানো উচিত?
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত পরীক্ষা করানো উচিত। সাধারণত বছরে একবার কিডনি ফাংশন টেস্ট করানো ভালো। যদি কোনো ঝুঁকির কারণ থাকে, তাহলে আরও ঘন ঘন পরীক্ষা করানো প্রয়োজন।
কিডনি সুস্থ রাখার উপায়
- স্বাস্থ্যকর খাদ্য: স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে, যাতে অতিরিক্ত লবণ, চিনি এবং চর্বি না থাকে।
- পর্যাপ্ত পানি পান: প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে।
- নিয়মিত ব্যায়াম: নিয়মিত ব্যায়াম করলে কিডনি সুস্থ থাকে।
- ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার: ধূমপান এবং মদ্যপান কিডনিকে ক্ষতি করে।
উপসংহার
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে কিডনি রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। সুস্থ থাকতে চাইলে, নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করুন।