জরায়ুর টিউমার: কারণ, লক্ষণ এবং চিকিৎসা

জরায়ুর টিউমার হল জরায়ুর পেশীতে বা অন্যান্য টিস্যুতে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। এটি সাধারণত ক্যান্সারজনিত হয় না, তবে কিছু ক্ষেত্রে ক্যান্সারে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই টিউমারগুলোকে সাধারণত ফাইব্রয়েড বলা হয়।

জরায়ুর টিউমারের কারণ

জরায়ুর টিউমারের সঠিক কারণ এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ইস্ট্রোজেন হরমোন এই টিউমারের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অন্যান্য কারণ হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে:

  • বংশগতি: পরিবারে যদি কারো জরায়ুর টিউমার থাকে তাহলে অন্য সদস্যদের এই সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
  • জাতি: আফ্রিকান আমেরিকান মহিলাদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।
  • বয়স: প্রজনন ক্ষমতাসম্পন্ন বয়সের মহিলাদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।
  • মোটা হওয়া: অতিরিক্ত ওজন জরায়ুর টিউমারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

জরায়ুর টিউমারের লক্ষণ

  • অনিয়মিত মাসিক: মাসিকের সময় বাড়তি রক্তপাত, অতিরিক্ত দিন ধরে রক্তপাত, মাসিকের মধ্যে রক্তপাত।
  • পেটে ব্যথা: পেটের নিচের অংশে ব্যথা, পিঠে ব্যথা, যৌন সম্পর্কের সময় ব্যথা।
  • প্রস্রাবের সমস্যা: বারবার প্রস্রাব করতে ইচ্ছা করা, প্রস্রাব করার সময় ব্যথা, প্রস্রাবে রক্ত।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য: অন্ত্রের গতি স্থবির হওয়া।
  • পেট ফোলা: পেট ফুলে যাওয়া।
  • ক্লান্তি: সারাক্ষণ ক্লান্ত লাগা।

লক্ষ্যণগুলি ব্যক্তিভেদে আলাদা হতে পারে এবং অনেক ক্ষেত্রে কোনো লক্ষণ নাও থাকতে পারে।

জরায়ুর টিউমারের চিকিৎসা

জরায়ুর টিউমারের চিকিৎসা টিউমারের আকার, অবস্থান, এবং রোগীর বয়স ও স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে। কিছু ক্ষেত্রে কোন চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না, কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়:

  • ওষুধ: ব্যথানাশক ওষুধ, রক্তপাত কমানোর ওষুধ, হরমোন থেরাপি ইত্যাদি।
  • সার্জারি: টিউমার অপসারণের জন্য সার্জারি করা হয়।
  • ইউটেরাইন আর্টেরি এম্বোলাইজেশন: এই পদ্ধতিতে টিউমারে রক্ত সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

জরায়ুর টিউমার প্রতিরোধ

জরায়ুর টিউমারকে সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধ করা সম্ভব না হলেও, নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করে ঝুঁকি কমানো যায়:

  • সুষম খাদ্য: সুষম খাদ্য গ্রহণ করে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা।
  • নিয়মিত ব্যায়াম: নিয়মিত ব্যায়াম করা।
  • ধূমপান মদ্যপান পরিহার: ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকা।
  • নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ: নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।

যদি আপনার জরায়ুর টিউমারের কোনো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।