পাকস্থলী ও অন্ত্রের ক্যান্সার, দুটি ভয়াবহ রোগ যেগুলি প্রায়ই আমাদের জীবনযাত্রার অভ্যাস ও পরিবেশগত কারণে ঘটে থাকে। এই রোগগুলি প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করা গেলে চিকিৎসা সহজ হয়ে যায়। তাই, এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।
পাকস্থলী ও অন্ত্রের ক্যান্সার: প্রাথমিক লক্ষণ
- পাকস্থলীর ক্যান্সার: অদম্য পেট ব্যথা, অল্প খেলেই পেট ভরে যাওয়া, ওজন কমে যাওয়া, বমি বমি ভাব, রক্ত বমি, কালো রঙের মল, অরুচি ইত্যাদি।
- অন্ত্রের ক্যান্সার: কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া, মলে রক্ত, পেটে ব্যথা, ওজন কমে যাওয়া, ক্লান্তি, পেট ফোলা ইত্যাদি।
কারণ
- পাকস্থলীর ক্যান্সার: হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ, ধূমপান, লবণাক্ত খাবার, সংরক্ষিত খাবার, পরিবারে ক্যান্সারের ইতিহাস ইত্যাদি।
- অন্ত্রের ক্যান্সার: পলিপ, আলসারেটিভ কোলাইটিস, ক্রোনের রোগ, ধূমপান, অতিরিক্ত মদ্যপান, শারীরিক অক্রিয়তা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি।
নির্ণয়
- এন্ডোস্কোপি: পাকস্থলী ও অন্ত্রের ভিতরের আস্তরণ পরীক্ষা করার একটি পদ্ধতি।
- কলোনোস্কোপি: বৃহদন্ত্র পরীক্ষা করার একটি পদ্ধতি।
- বায়োপ্সি: ক্যান্সার কোষ সনাক্ত করার জন্য একটি নমুনা পরীক্ষা।
- ইমেজিং পরীক্ষা: সিটি স্ক্যান, এমআরআই ইত্যাদি।
চিকিৎসা
- সার্জারি: ক্যান্সারাক্রান্ত অংশ অপসারণ।
- কিমোথেরাপি: ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করার জন্য ওষুধ ব্যবহার।
- রেডিওথেরাপি: রেডিয়েশন ব্যবহার করে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা।
- টার্গেটেড থেরাপি: ক্যান্সার কোষের নির্দিষ্ট অংশ লক্ষ্য করে চিকিৎসা করা।
প্রতিরোধ
- স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা: সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার।
- নিয়মিত চেকআপ: বিশেষ করে ৪০ বছরের উপরের ব্যক্তিদের।
- পরিবারের ইতিহাস: যদি পরিবারে ক্যান্সারের ইতিহাস থাকে, তাহলে নিয়মিত চেকআপ করা উচিত।
উপসংহার
পাকস্থলী ও অন্ত্রের ক্যান্সার প্রতিরোধযোগ্য নয়, তবে সচেতনতা ও প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয়ের মাধ্যমে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। সুতরাং, নিজের ও পরিবারের স্বাস্থ্যের যত্ন নিন এবং নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।