ফুসফুসের ফাংশন টেস্ট বা পালমোনারি ফাংশন টেস্ট (PFT) হল একটি নন-ইনভেসিভ পরীক্ষা যা আপনার ফুসফুস কতটা ভালো কাজ করছে তা পরিমাপ করে। এই পরীক্ষাটি বিভিন্ন ধরনের ফুসফুসের রোগ, যেমন অ্যাজমা, সিওপিডি, ফুসফুসের ক্যান্সার ইত্যাদি নির্ণয় করতে এবং চিকিৎসার কার্যকারিতা মূল্যায়ন করতে ব্যবহৃত হয়।
কেন ফুসফুসের ফাংশন টেস্ট করা হয়?
- রোগ নির্ণয়: ফুসফুসের বিভিন্ন রোগ, যেমন অ্যাজমা, সিওপিডি, ফুসফুসের ফাইব্রোসিস ইত্যাদি নির্ণয় করতে।
- রোগের তীব্রতা মূল্যায়ন: রোগ কতটা গুরুতর তা নির্ণয় করতে।
- চিকিৎসার কার্যকারিতা মূল্যায়ন: চিকিৎসা কতটা কার্যকর হচ্ছে তা পরীক্ষা করতে।
- শল্য চিকিৎসার আগে: শল্য চিকিৎসার আগে ফুসফুসের অবস্থা মূল্যায়ন করতে।
- কর্মক্ষেত্রে শ্বাসের সমস্যা: যারা ধূলাবালি বা রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে আসেন তাদের জন্য ফুসফুসের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে।
ফুসফুসের ফাংশন টেস্টে কী করা হয়?
এই পরীক্ষায় সাধারণত একটি স্পাইরোমিটার ব্যবহার করা হয়।স্পাইরোমিটার একটি যন্ত্র যা আপনার ফুসফুসে বাতাস কত দ্রুত এবং কত পরিমাণে প্রবেশ করতে পারে এবং বের হতে পারে তা পরিমাপ করে। পরীক্ষার সময় আপনাকে একটি মাউথ পিসের ভিতর শ্বাস নিতে এবং ছাড়তে বলা হবে।
ফুসফুসের ফাংশন টেস্টের ফলাফল কী বোঝায়?
ফুসফুসের ফাংশন টেস্টের ফলাফল বিভিন্ন মানের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়, যেমন:
- FVC (Forced Vital Capacity): আপনি একবারে কত পরিমাণ বাতাস বের করতে পারেন তা পরিমাপ করে।
- FEV1 (Forced Expiratory Volume in 1 second): এক সেকেন্ডে আপনি কত পরিমাণ বাতাস বের করতে পারেন তা পরিমাপ করে।
- FEV1/FVC ratio: FEV1 এবং FVC এর অনুপাত। এই অনুপাতটি ফুসফুসের রোগ নির্ণয় করতে সাহায্য করে।
এই মানগুলির তুলনা স্বাভাবিক মানের সাথে করা হয়। যদি আপনার ফলাফল স্বাভাবিক মানের চেয়ে কম হয়, তাহলে এটি ফুসফুসের কোনো সমস্যা থাকার ইঙ্গিত দিতে পারে।
ফুসফুসের ফাংশন টেস্টের আগে কী করবেন?
- পরীক্ষার আগে কমপক্ষে চার ঘন্টা ধরে ধূমপান করবেন না।
- পরীক্ষার আগে ৬ ঘন্টা কোনো ইনহেলার নিবেন না।
- পরীক্ষার আগে ভারী খাবার খাবেন না।
- পরীক্ষার আগে শ্বাসকষ্টের কোনো ওষুধ খাবেন না (ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া)।
ফুসফুসের ফাংশন টেস্টের পরে কী করবেন?
পরীক্ষার পরে আপনি আপনার স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যেতে পারবেন। ডাক্তার আপনার ফলাফলের বিশ্লেষণ করে আপনাকে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার পরামর্শ দেবেন।
মনে রাখবেন: ফুসফুসের ফাংশন টেস্ট একটি নিরাপদ এবং ব্যথাহীন পরীক্ষা। যদি আপনার শ্বাসকষ্ট বা ফুসফুসের অন্য কোনো সমস্যা থাকে, তাহলে আপনার ডাক্তার এই পরীক্ষাটি করার পরামর্শ দিতে পারেন।