হাইপোগ্লাইসেমিয়া: রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়ার বিপদ

হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়া একটি চিকিৎসাগত অবস্থা যেখানে রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কমে যায়। এটি প্রায়শই ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে দেখা যায়, বিশেষ করে যারা ইনসুলিন বা অন্যান্য ডায়াবেটিসের ওষুধ সেবন করেন।

হাইপোগ্লাইসেমিয়া কেন হয়?

  • ইনসুলিন বা ডায়াবেটিসের ওষুধের অতিরিক্ত মাত্রা: যদি ডায়াবেটিস রোগীরা নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি ইনসুলিন বা অন্যান্য ওষুধ গ্রহণ করেন, তাহলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যেতে পারে।
  • খাবার না খাওয়া বা খুব কম খাওয়া: যদি ডায়াবেটিস রোগীরা নির্ধারিত সময়ে খাবার না খান বা খুব কম খান, তাহলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যেতে পারে।
  • অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম: অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রমের ফলে শরীরে শর্করার ব্যবহার বেড়ে যায় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যেতে পারে।
  • অ্যালকোহল সেবন: অ্যালকোহল রক্তে শর্করার মাত্রাকে প্রভাবিত করে এবং হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে।
  • অন্যান্য রোগ: কিডনি রোগ, যকৃতের রোগ ইত্যাদি রোগও হাইপোগ্লাইসেমিয়ার কারণ হতে পারে।

হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ

হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে এবং এটি কত দ্রুত ঘটে তার উপর নির্ভর করে। সাধারণত নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি দেখা যায়:

  • ক্ষুধা লাগা
  • ঘামা
  • কাঁপুনি
  • দুর্বলতা
  • মাথা ঘোরা
  • হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি
  • বিভ্রান্তি
  • অস্থিরতা
  • জ্ঞান হারানো

হাইপোগ্লাইসেমিয়ার চিকিৎসা

হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে দ্রুত চিকিৎসা করা জরুরি। নিম্নলিখিত উপায়ে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার চিকিৎসা করা হয়:

  • দ্রুত কার্বোহাইড্রেট: চিনি, মধ, ফলের রস ইত্যাদি দ্রুত কার্বোহাইড্রেট খাওয়া।
  • ধীর কার্বোহাইড্রেট: ক্র্যাকার, বিস্কুট ইত্যাদি ধীর কার্বোহাইড্রেট খাওয়া।
  • গ্লুকোজ ট্যাবলেট: গ্লুকোজ ট্যাবলেট মুখে দেওয়া।
  • ইনজেকশন: গুরুতর হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ক্ষেত্রে ইনজেকশনের মাধ্যমে গ্লুকোজ দেওয়া হয়।

হাইপোগ্লাইসেমিয়া প্রতিরোধ

  • নিয়মিত রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করা: রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করে হাইপোগ্লাইসেমিয়া প্রতিরোধ করা যায়।
  • ডাক্তারের নির্দেশাবলী মেনে চলা: ডাক্তারের নির্দেশাবলী মেনে চলে ইনসুলিন বা অন্যান্য ওষুধের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা।
  • নিয়মিত খাবার খাওয়া: নিয়মিত খাবার খেয়ে এবং খাবারের মধ্যবর্তী সময়ে হালকা খাবার খেয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখা।
  • শারীরিক পরিশ্রমের সময় খাবার খাওয়া: শারীরিক পরিশ্রমের সময় বা তার আগে খাবার খেয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়া রোধ করা।
  • হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণগুলি চেনা: হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণগুলি চেনা এবং দ্রুত চিকিৎসা করা।

মনে রাখবেন: হাইপোগ্লাইসেমিয়া একটি গুরুতর সমস্যা। যদি আপনি হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় আক্রান্ত হন, তাহলে দ্রুত চিকিৎসা নিন।