গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসাউন্ড: গর্ভস্থ শিশুর ছবি দেখার পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরীক্ষা

গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসাউন্ড হল একটি নিরাপদ এবং ব্যথাহীন পরীক্ষা যার মাধ্যমে গর্ভস্থ শিশু এবং মায়ের গর্ভাশয়ের ছবি তোলা হয়। এই ছবিগুলো দেখে ডাক্তাররা শিশুর বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য এবং গর্ভাবস্থার অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পান।

কেন গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসাউন্ড করা হয়?

  • শিশুর বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ: আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে শিশুর বৃদ্ধি, ওজন এবং শারীরিক গঠন পর্যবেক্ষণ করা হয়। এটি নিশ্চিত করে যে শিশু স্বাভাবিকভাবে বড় হচ্ছে।
  • গর্ভাবস্থার সময়কাল নির্ধারণ: গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকে আল্ট্রাসাউন্ড করে শিশুর বয়স নির্ণয় করা হয় এবং প্রসবের তারিখ অনুমান করা হয়।
  • জন্মগত ত্রুটি শনাক্ত: আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে শিশুর হৃদয়, মস্তিষ্ক, মেরুদণ্ড এবং অন্যান্য অঙ্গের কোনো জন্মগত ত্রুটি আছে কিনা তা পরীক্ষা করা হয়।
  • একাধিক গর্ভধারণ শনাক্ত: যদি একাধিক শিশু গর্ভে থাকে তবে আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে তা সহজেই শনাক্ত করা যায়।
  • প্লাসেন্টা এবং অ্যামনিওটিক তরলের অবস্থা পরীক্ষা: আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে প্লাসেন্টা এবং অ্যামনিওটিক তরলের অবস্থা পরীক্ষা করে কোনো সমস্যা আছে কিনা তা দেখা হয়।
  • প্রসবের জন্য প্রস্তুতি: আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে শিশুর অবস্থান এবং প্রসবের জন্য তৈরি হওয়ার অবস্থা পরীক্ষা করে প্রসবের পরিকল্পনা করা হয়।

গর্ভাবস্থায় কখন আল্ট্রাসাউন্ড করা হয়?

  • প্রথম ত্রৈমাসিক: গর্ভাবস্থার ৮-১৪ সপ্তাহের মধ্যে প্রথম আল্ট্রাসাউন্ড করা হয়। এই আল্ট্রাসাউন্ডে শিশুর হৃদস্পন্দন শোনা যায় এবং গর্ভাবস্থার সময়কাল নির্ধারণ করা হয়।
  • দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক: গর্ভাবস্থার ১৮-২২ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় আল্ট্রাসাউন্ড করা হয়। এই আল্ট্রাসাউন্ডে শিশুর শারীরিক গঠন এবং অঙ্গের বিকাশ পরীক্ষা করা হয়।
  • তৃতীয় ত্রৈমাসিক: গর্ভাবস্থার ২৮-৩২ সপ্তাহের মধ্যে তৃতীয় আল্ট্রাসাউন্ড করা হয়। এই আল্ট্রাসাউন্ডে শিশুর ওজন এবং বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করা হয়।

আল্ট্রাসাউন্ড করার পদ্ধতি

আল্ট্রাসাউন্ড করার জন্য একটি যন্ত্র ব্যবহার করা হয় যার মাধ্যমে উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সির শব্দ তরঙ্গ দেহের ভিতরে পাঠানো হয়। এই শব্দ তরঙ্গ দেহের অভ্যন্তরের অঙ্গ এবং টিস্যুর ছবি তৈরি করে। আল্ট্রাসাউন্ড করার সময় কোনো ব্যথা হয় না।

আল্ট্রাসাউন্ডের উপকারিতা

  • নিরাপদ: আল্ট্রাসাউন্ড একটি নিরাপদ পরীক্ষা এবং এটি গর্ভস্থ শিশু বা মায়ের জন্য কোনো ক্ষতি করে না।
  • ব্যথাহীন: আল্ট্রাসাউন্ড করার সময় কোনো ব্যথা হয় না।
  • সহজলভ্য: আল্ট্রাসাউন্ড সহজলভ্য এবং খরচও কম।
  • বিস্তারিত তথ্য: আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে গর্ভস্থ শিশু এবং মায়ের গর্ভাশয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়।

গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসাউন্ড করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি গর্ভস্থ শিশু এবং মায়ের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।