জিইআরডি বা গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ একটি সাধারণ পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা যা পাকস্থলীর অ্যাসিড খাদ্যনালীতে ফিরে আসার কারণে হয়। এই অ্যাসিড খাদ্যনালীর ভিতরের আস্তরকে জ্বালিয়ে দেয় এবং বিভিন্ন ধরনের অস্বস্তি সৃষ্টি করে।
জিইআরডি কেন হয়?
জিইআরডি হওয়ার পিছনে অনেক কারণ থাকতে পারে, যেমন:
- নিম্ন খাদ্যনালী স্ফিংকটারের দুর্বলতা: এই পেশী খাদ্যনালী এবং পাকস্থলীর মধ্যবর্তী সীমানা রক্ষা করে। যদি এই পেশী দুর্বল হয়, তাহলে পাকস্থলীর অ্যাসিড খাদ্যনালীতে ফিরে আসতে পারে।
- হাইয়াটাল হার্নিয়া: যখন পাকস্থলীর একটি অংশ ডায়াফ্রামের একটি ছিদ্র দিয়ে বের হয়ে আসে, তখন তাকে হাইয়াটাল হার্নিয়া বলা হয়। এটি জিইআরডির একটি সাধারণ কারণ।
- চর্বিযুক্ত, মশলাদার বা অম্লীয় খাবার খাওয়া: এই ধরনের খাবার পাকস্থলীর অ্যাসিড উৎপাদন বাড়িয়ে দেয় এবং জিইআরডি-র লক্ষণগুলোকে আরও খারাপ করে তোলে।
- ধূমপান: ধূমপান নিম্ন খাদ্যনালী স্ফিংকটারকে দুর্বল করে এবং জিইআরডি-র ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
- অতিরিক্ত ওজন: অতিরিক্ত ওজন পেটের উপর চাপ বাড়িয়ে দেয় এবং জিইআরডি-র ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
- গর্ভাবস্থা: গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তন এবং বাচ্চার বৃদ্ধির কারণে পেটের উপর চাপ বাড়ে এবং জিইআরডি হতে পারে।
জিইআরডির লক্ষণ
- দাহ: বুকের মাঝখানে বা গলায় জ্বালাপোড়া অনুভূতি হওয়া।
- অম্লতার অনুভূতি: মুখে টক স্বাদ আসা।
- চোয়া ঢেকুর: খাবার বা পানি গিলে ফেলার পর চোয়া ঢেকুর আসা।
- গিলতে সমস্যা: গিলতে সমস্যা হওয়া বা গলায় কিছু আটকে থাকার অনুভূতি হওয়া।
- খাবার ফেরত আসা: খাবার বা পানি ফেরত আসা।
- বমি: বমি হওয়া।
- খাওয়ার পর অস্বস্তি: খাওয়ার পর বুকে চাপ অনুভূতি হওয়া।
- খাওয়ার পর শ্বাস ফেলতে কষ্ট হওয়া
- খাওয়ার পর কাশি হওয়া
জিইআরডির চিকিৎসা
জিইআরডির চিকিৎসা কারণ এবং লক্ষণের উপর নির্ভর করে। সাধারণত, জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং ওষুধের মাধ্যমে জিইআরডি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
- জীবনযাত্রার পরিবর্তন:
- ছোট ছোট করে বারবার খাওয়া
- খাওয়ার পর এক ঘণ্টা শুয়ে না থাকা
- চর্বিযুক্ত, মশলাদার বা অম্লীয় খাবার এড়িয়ে চলা
- ধূমপান বন্ধ করা
- ওজন কমানো
- ওষুধ:
- অ্যান্টাসিড: অতিরিক্ত অ্যাসিড নিরপেক্ষ করতে
- এইচ২ রিসেপ্টর ব্লকার: পাকস্থলীর অ্যাসিড উৎপাদন কমাতে
- প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর: পাকস্থলীর অ্যাসিড উৎপাদন সবচেয়ে বেশি কমাতে
গুরুত্বপূর্ণ: যদি আপনার জিইআরডির লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন।