বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট একটি জটিল চিকিৎসা পদ্ধতি। এই পদ্ধতির মাধ্যমে রোগাক্রান্ত অস্থিমজ্জাকে স্বাস্থ্যকর অস্থিমজ্জা দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়। এই পদ্ধতির সফলতা অনেকটা নির্ভর করে রোগীর প্রস্তুতির উপর। তাই ট্রান্সপ্লান্টের আগে রোগীকে কিছু বিশেষ প্রস্তুতি নিতে হয়।
কেন প্রস্তুতি জরুরি?
ট্রান্সপ্লান্টের আগে প্রস্তুতি জরুরি কারণ:
- শরীরকে ট্রান্সপ্লান্টের জন্য প্রস্তুত করা: কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপির মাধ্যমে রোগাক্রান্ত অস্থিমজ্জা ধ্বংস করা হয়। এই প্রক্রিয়াটি শরীরের জন্য কঠিন হতে পারে।
- সংক্রমণের ঝুঁকি কমানো: ট্রান্সপ্লান্টের পরে রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। প্রস্তুতির মাধ্যমে এই ঝুঁকি কমানো যায়।
- সফল ট্রান্সপ্লান্ট নিশ্চিত করা: যথাযথ প্রস্তুতির মাধ্যমে ট্রান্সপ্লান্টের সফলতা নিশ্চিত করা যায়।
ট্রান্সপ্লান্টের আগে রোগীকে কী কী প্রস্তুতি নিতে হয়?
- শারীরিক পরীক্ষা: ট্রান্সপ্লান্টের আগে রোগীর একটি বিস্তারিত শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। এতে রক্ত পরীক্ষা, ইসিজি, চেস্ট এক্স-রে ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
- দাতা খুঁজে পাওয়া: অ্যালোজেনিক ট্রান্সপ্লান্টের ক্ষেত্রে একজন উপযুক্ত দাতা খুঁজে পাওয়া জরুরি।
- ওষুধ সেবন: চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ সেবন করতে হয়।
- জীবনযাত্রার পরিবর্তন: ধূমপান, মদ্যপান এবং অন্যান্য অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস ত্যাগ করতে হয়।
- মনস্তাত্ত্বিক প্রস্তুতি: ট্রান্সপ্লান্ট একটি জটিল প্রক্রিয়া এবং এর সাথে মানসিক চাপ জড়িত। তাই রোগীকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করার জন্য কাউন্সেলিং করা হতে পারে।
- হাসপাতালে ভর্তি: ট্রান্সপ্লান্টের কয়েক দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়।
ট্রান্সপ্লান্টের আগে কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি
ট্রান্সপ্লান্টের আগে রোগীর শরীর থেকে রোগাক্রান্ত অস্থিমজ্জা ধ্বংস করার জন্য কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়াটি কন্ডিশনিং নামে পরিচিত। কন্ডিশনিংয়ের ফলে রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
ট্রান্সপ্লান্টের পরে
ট্রান্সপ্লান্টের পরে রোগীকে হাসপাতালে কিছুদিন থাকতে হয়। এই সময় রোগীর শরীরকে স্বাস্থ্যকর করার জন্য বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হয়। রোগীকে নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করাতে হয় এবং সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা নিতে হয়।
উপসংহার
বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট একটি জটিল চিকিৎসা পদ্ধতি এবং এর সফলতা অনেকটা নির্ভর করে রোগীর প্রস্তুতির উপর। তাই ট্রান্সপ্লান্টের আগে রোগীকে চিকিৎসকের নির্দেশাবলী সঠিকভাবে অনুসরণ করতে হবে এবং মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।