শিশুদের ফিমোসিস: কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

শিশুদের মধ্যে ফিমোসিস একটি সাধারণ সমস্যা। এটি লিঙ্গের চামড়া (ফোরস্কিন) শিশ্নের মাথা (গ্ল্যান্স)কে পুরোপুরি ঢেকে রাখে এবং পিছনে সরে যেতে পারে না, এমন একটি অবস্থা। সাধারণত শিশুদের জন্মের সময় বা জন্মের পরপরই এই সমস্যাটি লক্ষ্য করা যায়।

ফিমোসিস কেন হয়?

  • স্বাভাবিক বিকাশ: অনেক শিশুর জন্মের সময় ফোরস্কিন শিশ্নের মাথাকে পুরোপুরি ঢেকে রাখে এবং ধীরে ধীরে বয়স বাড়ার সাথে সাথে এটি নিজে থেকেই পিছনে সরে যেতে থাকে। কিন্তু কিছু শিশুর ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়াটি ধীরে হয় বা হয় না।
  • সংক্রমণ: ফোরস্কিনের নিচে সংক্রমণ হলে তা ফোরস্কিনকে শক্ত করে দিতে পারে এবং ফিমোসিসের কারণ হতে পারে।
  • আঘাত: লিঙ্গে আঘাত লাগলে ফোরস্কিন ফুলে যেতে পারে এবং শিশ্নের মাথা ঢেকে রাখতে পারে।

ফিমোসিসের লক্ষণ

  • শিশ্নের মাথা পুরোপুরি দেখা যায় না।
  • প্রস্রাব করার সময় সমস্যা হয়।
  • প্রস্রাব ফোঁটা ফোঁটা করে পড়ে।
  • শিশ্নের মাথায় ব্যথা বা জ্বালা হয়।
  • ফোরস্কিনের নিচে পুঁজ জমতে পারে।

ফিমোসিসের চিকিৎসা

  • প্রতীক্ষা: অনেক ক্ষেত্রে শিশুর বয়স বাড়ার সাথে সাথে ফিমোসিস নিজে থেকে ভালো হয়ে যায়। বিশেষ করে ৩-৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে ডাক্তাররা সাধারণত প্রতীক্ষা করার পরামর্শ দেন।
  • স্টেরয়েড ক্রিম: কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তার স্টেরয়েড ক্রিম ব্যবহার করার পরামর্শ দিতে পারেন। এই ক্রিম ফোরস্কিনকে নরম করে এবং এটি পিছনে সরে যেতে সাহায্য করে।
  • সার্জারি (খতনা): যদি স্টেরয়েড ক্রিম ব্যবহার করেও কোনো উপকার না হয় বা অন্যান্য জটিলতা থাকে তাহলে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে। অস্ত্রোপচারে ফোরস্কিন অপসারণ করা হয়।

ফিমোসিসের অস্ত্রোপচারের সুবিধা

  • ফোরস্কিন সম্পূর্ণ অপসারিত হয়ে যায়।
  • প্রস্রাব করার সময় সমস্যা দূর হয়।
  • সংক্রমণের ঝুঁকি কমে যায়।
  • শিশ্নের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা সহজ হয়।

ফিমোসিসের অস্ত্রোপচারের ঝুঁকি

  • রক্তপাত
  • সংক্রমণ
  • অ্যানেস্থেসিয়ার প্রতিক্রিয়া

কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন?

  • আপনার শিশুর শিশ্নের মাথা পুরোপুরি দেখা না গেলে।
  • প্রস্রাব করার সময় সমস্যা হলে ।
  • শিশ্নের মাথায় ব্যথা বা জ্বালা হলে ।
  • ফোরস্কিনের নিচে পুঁজ জমতে পারে।

মনে রাখবেন: ফিমোসিস সাধারণত গুরুতর সমস্যা নয়। তবে, যদি আপনার শিশুর শিশ্নে কোনো সমস্যা লক্ষ্য করেন তাহলে অবশ্যই একজন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। তিনি আপনার শিশুর জন্য সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করে দেবেন।