শিশুদের মধ্যে হাইড্রোসিল একটি সাধারণ সমস্যা। এটি অণ্ডকোষের চারপাশে তরল জমার কারণে হয় এবং ফলে অণ্ডকোষ ফুলে ওঠে। সাধারণত জন্মের সময় বা জন্মের পরপরই এই সমস্যাটি লক্ষ্য করা যায়।
হাইড্রোসিল কেন হয়?
- ভ্রূণের বিকাশের সময়: ভ্রূণের বিকাশের সময় অণ্ডকোষ পেট থেকে স্ক্রোটামে নেমে আসে। এই সময় একটি থলি অণ্ডকোষকে ঘিরে থাকে। সাধারণত এই থলি বন্ধ হয়ে যায় এবং তরল শোষিত হয়। কিন্তু যদি এই থলি ঠিকভাবে বন্ধ না হয় তাহলে তরল জমা হয়ে হাইড্রোসিল হয়।
- আঘাত: অণ্ডকোষে আঘাত লাগলেও হাইড্রোসিল হতে পারে।
হাইড্রোসিলের লক্ষণ
- অণ্ডকোষ ফুলে ওঠা: এটি হাইড্রোসিলের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ।
- ফোলা অংশ স্পর্শে নরম
- সাধারণত ব্যথা হয় না
- ফোলা অংশ আকারে বাড়তে পারে
হাইড্রোসিলের ধরন
- কমিউনিকেটিং হাইড্রোসিল: এই ধরনের হাইড্রোসিলে অন্য কোনো অংশের সাথে যোগাযোগ থাকে।
- নন-কমিউনিকেটিং হাইড্রোসিল: এই ধরনের হাইড্রোসিলে কোনো যোগাযোগ থাকে না।
হাইড্রোসিলের চিকিৎসা
- প্রতীক্ষা: অনেক ক্ষেত্রে শিশুর বয়স বাড়ার সাথে সাথে হাইড্রোসিল নিজে থেকে ভালো হয়ে যায়। বিশেষ করে এক বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে ডাক্তাররা সাধারণত প্রতীক্ষা করার পরামর্শ দেন।
- অস্ত্রোপচার: যদি হাইড্রোসিল বড় হয় বা এক বছরের পরেও ছোট না হয়, তাহলে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে। অস্ত্রোপচারে ফোলা অংশটি কেটে ফেলা হয়।
হাইড্রোসিলের অস্ত্রোপচারের সুবিধা
- ফোলা অংশটি পুরোপুরি দূর হয়ে যায়
- শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশ নিশ্চিত হয়
- কোনো ধরনের জটিলতা হওয়ার সম্ভাবনা কম
হাইড্রোসিলের অস্ত্রোপচারের ঝুঁকি
- সংক্রমণ
- রক্তপাত
- অ্যানেস্থেসিয়ার প্রতিক্রিয়া
কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন?
- আপনার শিশুর অণ্ডকোষ ফুলে থাকলে
- ফোলা অংশের আকার বাড়তে থাকলে
- ফোলা অংশ স্পর্শে গরম বা লাল হয়ে থাকলে
- শিশু জ্বর বা ব্যথা অনুভব করলে
মনে রাখবেন: হাইড্রোসিল সাধারণত গুরুতর সমস্যা নয়। তবে, যদি আপনার শিশুর অণ্ডকোষ ফুলে থাকে তাহলে অবশ্যই একজন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। তিনি আপনার শিশুর জন্য সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করে দেবেন।