শিশুর অস্ত্রোপচার একটি চিন্তার বিষয় হতে পারে। বাবা-মায়েরা প্রায়ই চিন্তিত হন তাদের সন্তানের ব্যথা এবং অস্ত্রোপচারের পরের পরিস্থিতি নিয়ে। তবে, বাবা-মায়ের সঠিক যত্ন এবং সমর্থন শিশুর দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
অস্ত্রোপচারের আগে বাবা-মায়ের ভূমিকা
- ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ: অস্ত্রোপচারের আগে ডাক্তারের সাথে সব বিষয় খোলাখুলি আলোচনা করা জরুরি। অস্ত্রোপচারের ধরন, সময়কাল, ঝুঁকি, এবং পরবর্তী যত্ন সম্পর্কে বিস্তারিত জানা উচিত।
- শিশুকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করা: শিশুকে তার বয়স অনুযায়ী অস্ত্রোপচার সম্পর্কে সহজ ভাষায় বোঝানো উচিত। ভয় বা উদ্বেগ কমাতে গল্প, ছবি বা খেলনা ব্যবহার করা যেতে পারে।
- সঠিক পুষ্টি: অস্ত্রোপচারের আগে শিশুকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো উচিত। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং অস্ত্রোপচারের পর দ্রুত সুস্থ হওয়ায় সাহায্য করে।
- অন্যান্য পরীক্ষা: ডাক্তার যেসব পরীক্ষা নির্ধারণ করবেন সেগুলো সম্পন্ন করা।
- হাসপাতালের পরিবেশ সম্পর্কে জানা: হাসপাতালের পরিবেশ এবং অস্ত্রোপচারের পরের ব্যবস্থা সম্পর্কে আগে থেকে জানা উচিত।
অস্ত্রোপচারের পরে বাবা-মায়ের ভূমিকা
- শিশুর সাথে থাকা: অস্ত্রোপচারের পর শিশুর পাশে থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে শিশু নিরাপদ বোধ করে এবং দ্রুত সুস্থ হয়।
- ডাক্তারের নির্দেশনা অনুসরণ করা: ডাক্তার যেসব ওষুধ এবং যত্নের নির্দেশনা দেবেন সেগুলো খুব মনোযোগ দিয়ে অনুসরণ করা উচিত।
- ব্যথার ব্যবস্থাপনা: শিশু যদি ব্যথা অনুভব করে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথানাশক ওষুধ দেওয়া উচিত।
- পুষ্টি: অস্ত্রোপচারের পর হালকা এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো উচিত।
- সংক্রমণ থেকে রক্ষা করা: অস্ত্রোপচারের জায়গা পরিষ্কার রাখা এবং সংক্রমণ থেকে রক্ষা করা জরুরি।
- মানসিক সমর্থন: শিশুকে মানসিকভাবে শক্তিশালী করতে হবে। তার সাথে খেলা, গল্প করা এবং তার পছন্দের কাজ করতে সাহায্য করা উচিত।
শিশুর যত্নের কিছু পরামর্শ
- আরামদায়ক পরিবেশ: শিশুকে আরামদায়ক পরিবেশে রাখা উচিত।
- পর্যাপ্ত বিশ্রাম: শিশুকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিতে হবে।
- তরল খাবার: অস্ত্রোপচারের পর প্রথম কয়েকদিন তরল খাবার দেওয়া উচিত।
- ধীরে ধীরে খাবারের পরিমাণ বাড়ানো: ধীরে ধীরে খাবারের পরিমাণ বাড়ানো উচিত।
- ডাক্তারের নিয়মিত পরামর্শ নেওয়া: নির্ধারিত সময়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
বাবা-মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য
শিশুর অস্ত্রোপচার বাবা-মায়ের জন্যও একটি মানসিক চাপ । তাই বাবা-মায়ের নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়াও খুবই জরুরি। পরিবারের অন্য সদস্যদের সাহায্য নেওয়া, বন্ধুদের সাথে কথা বলা বা কোনো থেরাপিস্টের সাথে কথা বলা যেতে পারে।
উপসংহার
শিশুর অস্ত্রোপচার একটি চ্যালেঞ্জিং সময় হলেও বাবা-মায়ের সঠিক যত্ন এবং সমর্থন শিশুর দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠাতে সাহায্য করতে পারে। ডাক্তারের নির্দেশনা অনুসরণ করা এবং শিশুকে ভালোবাসা ও যত্ন দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।