সিজারিয়ান অপারেশনের পর অনেক মায়েরই কোমরে ব্যথা অনুভূত হয়। এই ব্যথা সাধারণত অস্থায়ী হলেও, কিছু ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। এই আর্টিকেলটি সিজার পরবর্তী কোমর ব্যথার কারণ, প্রতিকার ও যত্ন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেবে।
সিজার পরবর্তী কোমর ব্যথার কারণ
- অপারেশনের কারণে: অস্ত্রোপচারের সময় কোমরের মাংসপেশি এবং লিগামেন্টগুলোতে টান পড়ে, যার ফলে ব্যথা হয়।
- এপিডুরাল বা স্পাইনাল অ্যানেস্থেসিয়া: অপারেশনের সময় দেওয়া এই অ্যানেস্থেসিয়া কোমরের মাংসপেশি ও স্নায়ুকে প্রভাবিত করতে পারে।
- শারীরিক পরিবর্তন: গর্ভাবস্থায় শরীরের ওজন বৃদ্ধি এবং শারীরিক পরিবর্তনের ফলে কোমরের উপর চাপ পড়ে।
- অতিরিক্ত ওজন বহন: সন্তানের যত্ন নেওয়ার সময় শিশুকে বহন করার ফলে কোমরের ব্যথা বাড়তে পারে।
- পেলভিক ফ্লোরের দুর্বলতা: গর্ভাবস্থা এবং প্রসবের ফলে পেলভিক ফ্লোরের দুর্বলতা দেখা দিতে পারে, যা কোমর ব্যথার একটি কারণ হতে পারে।
সিজার পরবর্তী কোমর ব্যথার লক্ষণ
- কোমরের তীব্র বা হালকা ব্যথা
- কোমরের দুর্বলতা
- পিঠে ব্যথা
- পায়ে ব্যথা
- চলাফেরার সময় সমস্যা
সিজার পরবর্তী কোমর ব্যথার প্রতিকার
- বিশ্রাম: যতটা সম্ভব বিশ্রাম নিন।
- গরম সেঁক: গরম পানির বোতল বা হিটিং প্যাড ব্যবহার করে কোমরে সেঁক দিন।
- ব্যথানাশক ওষুধ: ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করুন।
- ফিজিওথেরাপি: একজন ফিজিওথেরাপিস্ট আপনাকে কোমরের মাংসপেশিকে শক্তিশালী করার এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারেন।
- পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ: এই এক্সারসাইজ পেলভিক ফ্লোরের মাংসপেশিকে শক্তিশালী করে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- যোগাসন: কিছু নির্দিষ্ট যোগাসন কোমরের ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
সিজার পরবর্তী কোমর ব্যথা প্রতিরোধ
- সঠিক ভঙ্গি: দাঁড়ানো, বসা এবং শোয়ার সময় সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখুন।
- হালকা ব্যায়াম: ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী হালকা ব্যায়াম করুন।
- ওজন কমান: অতিরিক্ত ওজন কোমরের উপর চাপ বাড়ায়, তাই ওজন কমানোর চেষ্টা করুন।
- শিশুকে সঠিকভাবে বহন করুন: শিশুকে বহন করার সময় কোমরের উপর চাপ না পড়ার মতো করে বহন করুন।
- পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার: পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খেয়ে শরীরকে শক্তিশালী করুন।
কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন?
- যদি ব্যথা তীব্র হয় এবং দিনে দিনে বাড়তে থাকে।
- যদি ব্যথার সাথে অন্য কোনো লক্ষণ দেখা দেয়।
- যদি ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার পরেও ব্যথা না কমে।
মনে রাখবেন: সিজার পরবর্তী কোমর ব্যথা সাধারণত অস্থায়ী। তবে যদি ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা দৈনন্দিন কাজকর্মে বাধা দেয়, তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।