হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক দুইটিই জীবনঘাতী অবস্থা। দুটিরই কারণ হল হৃদপিণ্ড বা মস্তিষ্কের কোনো অংশে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়া। তাই দ্রুত চিকিৎসা না করা হলে এর ফলাফল মারাত্মক হতে পারে।
হার্ট অ্যাটাক:
হার্ট অ্যাটাক বা মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন হৃদপিণ্ডে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে হয়। এটি সাধারণত হৃদপিণ্ডের ধমনীতে ফ্যাট জমে থাকার কারণে হয়।
- প্রকারভেদ:
- STEMI: এতে হৃদপিণ্ডের ধমনী সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।
- NSTEMI: এতে ধমনী আংশিকভাবে বন্ধ থাকে।
- লক্ষণ:
- বুকে চাপ বা ব্যথা
- শ্বাসকষ্ট
- ঘামা
- বমি বমি ভাব
- চোখ ঘোলা হয়ে যাওয়া
- চিকিৎসা:
- অ্যান্টিপ্লেটলেট ওষুধ
- অ্যান্টিকোয়্যাগুল্যান্ট ওষুধ
- ব্যথানাশক
- অক্সিজেন
- এঞ্জিওপ্লাস্টি বা বাইপাস সার্জারি (জরুরি ক্ষেত্রে)
স্ট্রোক:
স্ট্রোক হল মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়া। এটি মস্তিষ্কের কোষের মৃত্যু ঘটাবে এবং শরীরের বিভিন্ন কাজে প্রভাব ফেলবে।
- প্রকারভেদ:
- ইস্কেমিক স্ট্রোক: এটি মস্তিষ্কের ধমনীতে রক্ত জমাট বাঁধার কারণে হয়।
- হেমোরেজিক স্ট্রোক: এটি মস্তিষ্কের রক্তনালী ফেটে যাওয়ার কারণে হয়।
- লক্ষণ:
- মুখ বা হাত বা পা বাঁকা হয়ে যাওয়া
- হঠাৎ কথা বলতে বা বুঝতে সমস্যা হওয়া
- হঠাৎ ভারসাম্য হারানো বা চলাচল করতে সমস্যা হওয়া
- দৃষ্টি ঝাপসা হওয়া
- চিকিৎসা:
- ইস্কেমিক স্ট্রোকের জন্য: থ্রম্বোলাইটিক ওষুধ (রক্ত জমাট ভাঙার জন্য), এন্জিওপ্লাস্টি
- হেমোরেজিক স্ট্রোকের জন্য: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ থামানোর চেষ্টা
দ্রুত চিকিৎসার গুরুত্ব:
হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ক্ষেত্রে সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া হলে রোগীর সুস্থতার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
- স্বর্ণালী ঘণ্টা: হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে আক্রান্ত হওয়ার প্রথম ঘণ্টাকে স্বর্ণালী ঘণ্টা বলা হয়। এই সময়ের মধ্যে চিকিৎসা দেওয়া হলে স্থায়ী ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
- স্ট্রোকের ক্ষেত্রে: স্ট্রোকের ক্ষেত্রেও দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া জরুরি।
প্রতিরোধ:
হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব। এর জন্য নিম্নলিখিত ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে:
- স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
- নিয়মিত ব্যায়াম
- রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ
- ধূমপান ত্যাগ
- ওজন নিয়ন্ত্রণ
মনে রাখবেন: হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।