হার্ট অ্যাটাক, বা মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন, হৃদপিণ্ডের একটি গুরুতর অবস্থা যা হঠাৎ রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে হয়। যদি দ্রুত চিকিৎসা না করা হয়, তবে এটি মৃত্যুতে পরিণত হতে পারে।
হার্ট অ্যাটাকের সাধারণ লক্ষণগুলি
সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণটি হল বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি, যা চাপ, দমবন্ধ হওয়া বা জ্বালাপোড়ার মতো অনুভূত হতে পারে। তবে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলি সবসময় একই রকম হয় না এবং ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। অন্যান্য লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:
- শ্বাসকষ্ট: হার্ট অ্যাটাকের সময় শ্বাসকষ্ট হওয়া খুবই সাধারণ।
- ঠান্ডা ঘাম: হঠাৎ ঠান্ডা ঘাম আসা হার্ট অ্যাটাকের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।
- বমি বমি ভাব বা বমি: কখনও কখনও হার্ট অ্যাটাকের সময় বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে।
- মাথা ঘোরা বা মাথা ব্যথা: হার্ট অ্যাটাকের সময় রক্তচাপ কমে যাওয়ার কারণে মাথা ঘোরা বা মাথা ব্যথা হতে পারে।
- দুর্বলতা বা অবসাদ: হার্ট অ্যাটাকের সময় শরীর দুর্বল হয়ে পড়তে পারে এবং অবসাদ অনুভূত হতে পারে।
- বাহু, ঘাড় বা চোয়ালে ব্যথা: বুকের ব্যথার সাথে সাথে বাহু, ঘাড় বা চোয়ালে ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
নারীদের ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলি
নারীদের ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলি পুরুষদের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন হতে পারে। নারীরা বুকের ব্যথার পরিবর্তে শ্বাসকষ্ট, অস্বস্তি, পিঠের ব্যথা, বমি বমি ভাব এবং অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করতে পারেন।
হার্ট অ্যাটাক হলে কী করবেন
যদি আপনি বা আপনার কেউ হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ অনুভব করেন, তাহলে দেরি না করে এই নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নিন:
- এমারজেন্সি নম্বরে কল করুন: দ্রুততম সময়ে এমারজেন্সি নম্বরে কল করুন এবং অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য ডাকুন।
- বিশ্রাম নিন: শান্তভাবে বসুন বা শুয়ে পড়ুন এবং কোনো ধরনের শারীরিক কাজ করবেন না।
- নাইট্রোগ্লিসারিন ব্যবহার করুন: যদি আপনার ডাক্তার নাইট্রোগ্লিসারিন লিখে দিয়ে থাকেন, তাহলে তা ব্যবহার করুন।
- অ্যাসপিরিন চিবিয়ে খান: যদি আপনার ডাক্তার অ্যাসপিরিন খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন, তাহলে একটি অ্যাসপিরিন চিবিয়ে খান।
হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ
হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধের জন্য আপনি নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নিতে পারেন:
- সুস্থ খাবার খান: ফল, সবজি, পুরো শস্য এবং মাছ খান।
- নিয়মিত ব্যায়াম করুন: সপ্তাহে কমপক্ষে 150 মিনিট মধ্যম তীব্রতার ব্যায়াম করুন।
- ধূমপান ত্যাগ করুন: ধূমপান হৃদরোগের একটি প্রধান কারণ।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন: অতিরিক্ত ওজন হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
- রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করুন: নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং ওষুধ সেবন করুন (যদি প্রয়োজন হয়)।
- মানসিক চাপ কমান: যোগ, ধ্যান বা অন্য কোনো শিথিলকরণ কৌশল অবলম্বন করুন।
মনে রাখবেন: হার্ট অ্যাটাক একটি জীবননাশী অবস্থা। যদি আপনি বা আপনার কেউ হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ অনুভব করেন, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।