মূত্রনালীর পাথর: জানুন সবকিছু

ইউরিনারি স্টোন বা মূত্রনালীর পাথর কী?

ইউরিনারি স্টোন বা মূত্রনালীর পাথর হল মূত্রতন্ত্রে কঠিন খনিজ পদার্থের জমা হওয়া। এই পাথরগুলি সাধারণত কিডনিতে তৈরি হয় এবং মূত্রনালী, মূত্রথলি বা মূত্রনালিতে চলে যেতে পারে। যখন এই পাথরগুলি মূত্রনালীতে আটকে যায়, তখন তীব্র ব্যথা, বমি, জ্বর ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

কেন হয় ইউরিনারি স্টোন?

ইউরিনারি স্টোন হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে, যেমন:

  • প্রস্রাবে খনিজ পদার্থের উচ্চ ঘনত্ব: ক্যালসিয়াম, অক্সালেট, ইউরিক এসিড ইত্যাদি খনিজ পদার্থের পরিমাণ বেশি হলে পাথর তৈরির সম্ভাবনা বাড়ে।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না পান করা: পানি শরীর থেকে অতিরিক্ত খনিজ পদার্থ বের করে দেয়। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না পান করলে পাথর তৈরির ঝুঁকি বাড়ে।
  • মেটাবলিক রোগ: কিছু মেটাবলিক রোগ, যেমন হাইপারপ্যারাথাইরয়েডিজম, গাউট ইত্যাদি, ইউরিনারি স্টোন হওয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • আনুষ্ঠানিক খাদ্য: কিছু খাবার, যেমন পালং শাক, চকোলেট, মটরশুটি ইত্যাদি, ইউরিনারি স্টোন তৈরির ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • কিছু ওষুধ: কিছু ওষুধ, যেমন মূত্রবর্ধক, ক্যালসিয়াম সম্পূরক ইত্যাদি, ইউরিনারি স্টোন তৈরির ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • পরিবারিক ইতিহাস: যদি পরিবারের কারো ইউরিনারি স্টোন হয়ে থাকে, তাহলে আপনারও হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

ইউরিনারি স্টোনের লক্ষণ

ইউরিনারি স্টোনের লক্ষণগুলি পাথরের আকার, অবস্থান এবং ব্যক্তির সাধারণ স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে। কিছু সাধারণ লক্ষণ হল:

  • তীব্র ব্যথা: পেট, পিঠ বা পাশে তীব্র ব্যথা হতে পারে।
  • প্রস্রাবের সময় ব্যথা: প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া বা ব্যথা হতে পারে।
  • প্রস্রাবে রক্ত: প্রস্রাবে রক্ত দেখা যেতে পারে।
  • বমি: ব্যথার কারণে বমি হতে পারে।
  • জ্বর: সংক্রমণ হলে জ্বর হতে পারে।
  • প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া: প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যেতে পারে বা প্রস্রাব আটকে যেতে পারে।

ইউরিনারি স্টোনের চিকিৎসা

ইউরিনারি স্টোনের চিকিৎসা পাথরের আকার, অবস্থান এবং লক্ষণগুলির উপর নির্ভর করে। কিছু সাধারণ চিকিৎসা হল:

  • ওষুধ: ব্যথানাশক, মূত্রবর্ধক ইত্যাদি ওষুধ দেওয়া হতে পারে।
  • শকওয়েভ থেরাপি: শকওয়েভ ব্যবহার করে পাথরকে ছোট ছোট টুকরো করে ভেঙে দেওয়া হয়।
  • সার্জারি: যদি পাথর খুব বড় হয় বা অন্য চিকিৎসা পদ্ধতি কাজ না করে, তাহলে সার্জারি করতে হয়।

ইউরিনারি স্টোন প্রতিরোধ

ইউরিনারি স্টোন প্রতিরোধ করার জন্য নিম্নলিখিত ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে:

  • পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন: দিনে অন্তত ২-৩ লিটার পানি পান করুন।
  • স্বাস্থ্যকর খাবার খান: ফল, শাকসবজি, পুরো শস্য ইত্যাদি খান।
  • নুন কম খান: নুনের পরিমাণ কমিয়ে দিন।
  • ক্যালসিয়াম সম্পূরক খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
  • ওজন কমান।