হার্নিয়া কী?
হার্নিয়া হল একটি অবস্থা যেখানে শরীরের কোনো অংশের পেশী বা টিস্যুর দুর্বল স্থান দিয়ে কোনো অঙ্গ বা টিস্যু বের হয়ে আসে। সাধারণত পেট বা কুঁচকির এলাকায় এই সমস্যাটি দেখা যায়।
হার্নিয়ার কারণ:
হার্নিয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, যেমন:
- জন্মগত দুর্বলতা: কিছু মানুষ জন্ম থেকেই পেশী বা টিস্যুর দুর্বলতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে, যা হার্নিয়া হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
- বয়স: বয়স বাড়ার সাথে সাথে পেশী ও টিস্যু দুর্বল হয়ে যায়, যা হার্নিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়।
- ভারী ওজন তোলা: ভারী ওজন তোলা বা শারীরিক পরিশ্রমের ফলে পেটের পেশীতে চাপ পড়ে এবং হার্নিয়া হতে পারে।
- কাশি: দীর্ঘদিন ধরে কাশি হলে পেটের পেশীতে চাপ পড়ে এবং হার্নিয়া হতে পারে।
- অন্ত্রের সমস্যা: কোষ্ঠকাঠিন্য বা অন্য কোনো অন্ত্রের সমস্যা হলে হার্নিয়া হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
হার্নিয়ার প্রকারভেদ:
হার্নিয়ার বিভিন্ন প্রকার রয়েছে, যেমন:
- ইনগুইনাল হার্নিয়া: এটি সবচেয়ে সাধারণ ধরনের হার্নিয়া। এই ধরনের হার্নিয়ায় অন্ত্র বা অন্য কোনো টিস্যু কুঁচকির এলাকায় পেশীর দুর্বল স্থান দিয়ে বের হয়ে আসে।
- ফেমোরাল হার্নিয়া: এই ধরনের হার্নিয়া কুঁচকির উপরের অংশে হয়। এটি মহিলাদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
- উম্বিলিকাল হার্নিয়া: এই ধরনের হার্নিয়া নাভির কাছে হয়। শিশুদের মধ্যে এই ধরনের হার্নিয়া বেশি দেখা যায়।
- হাইটাল হার্নিয়া: এই ধরনের হার্নিয়ায় পাকস্থলী বা অন্য কোনো পেটের অঙ্গ বুকের ভিতরে চলে যায়।
হার্নিয়ার লক্ষণ:
- কুঁচকি বা পেটে ফোলা বা গোলাকার উঁচু জায়গা দেখা দেওয়া।
- কাশি, ওজন তোলা বা দাঁড়ানোর সময় ফোলাটি বড় হওয়া।
- ফোলা জায়গায় ব্যথা বা অস্বস্তি।
- বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
- কোষ্ঠকাঠিন্য।
- ফোলা জায়গায় লাল হয়ে যাওয়া বা স্ফীতি।
হার্নিয়ার চিকিৎসা:
হার্নিয়ার একমাত্র চিকিৎসা হল অস্ত্রোপচার। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দুর্বল পেশীকে মেরামত করা হয় এবং বের হয়ে আসা অঙ্গ বা টিস্যুকে আবার তার সঠিক জায়গায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন:
- যদি আপনার কুঁচকি বা পেটে কোনো ফোলা বা গোলাকার উঁচু জায়গা দেখা দেয়।
- যদি ফোলা জায়গায় ব্যথা বা অস্বস্তি হয়।
- যদি ফোলা জায়গা কাশি, ওজন তোলা বা দাঁড়ানোর সময় বড় হয়।
উপসংহার:
হার্নিয়া একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, এটি গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। তাই যদি আপনার হার্নিয়ার কোনো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।