স্পাইন কম্প্রেশন ফ্র্যাকচার হল মেরুদণ্ডের একটি সাধারণ আঘাত যেখানে মেরুদণ্ডের হাড় বা কশেরুকা ভেঙে যায় এবং চ্যাপ্টা হয়ে যায়। এটি সাধারণত অস্টিওপোরোসিসের কারণে হয়, যা হাড়কে দুর্বল করে তোলে।
স্পাইন কম্প্রেশন ফ্র্যাকচারের কারণ
- অস্টিওপোরোসিস: এটি সবচেয়ে সাধারণ কারণ। অস্টিওপোরোসিসের কারণে হাড় দুর্বল হয়ে যায় এবং সামান্য আঘাতেও ভেঙে যেতে পারে।
- আঘাত: উচ্চতা থেকে পড়া, গাড়ির দুর্ঘটনা বা ভারী জিনিস তোলা ইত্যাদির ফলেও স্পাইন কম্প্রেশন ফ্র্যাকচার হতে পারে।
- ক্যান্সার: মেরুদণ্ডের ক্যান্সারও এই সমস্যার কারণ হতে পারে।
- স্টেরয়েড: দীর্ঘদিন ধরে স্টেরয়েড ব্যবহার করা।
স্পাইন কম্প্রেশন ফ্র্যাকচারের লক্ষণ
- ব্যথা: আক্রান্ত স্থানে তীব্র ব্যথা, বিশেষ করে দাঁড়ালে বা হাঁটলে।
- উচ্চতা কমে যাওয়া: কশেরুকা ভেঙে যাওয়ার কারণে উচ্চতা সামান্য কমে যেতে পারে।
- শ্বাসকষ্ট: যদি ফ্র্যাকচার বুকের কাছে হয় তাহলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
স্পাইন কম্প্রেশন ফ্র্যাকচারের চিকিৎসা
স্পাইন কম্প্রেশন ফ্র্যাকচারের চিকিৎসা আঘাতের তীব্রতা এবং রোগীর সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে। সাধারণত নিম্নলিখিত চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়:
- দেখভাল ও ওষুধ: ব্যথানাশক ওষুধ, মাসল রিলাক্সেন্ট এবং স্টেরয়েড ইনজেকশন দেওয়া হতে পারে।
- ব্রেস বা কর্সেট: মেরুদণ্ডকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য ব্রেস বা কর্সেট পরতে বলা হতে পারে।
- ফিজিওথেরাপি: ব্যথার তীব্রতা কমে গেলে ফিজিওথেরাপি শুরু করা হয়।
- অস্ত্রোপচার: গুরুতর ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে। ভার্টিব্রোপ্লাস্টি বা কাইফোপ্লাস্টি হল দুটি সাধারণ অস্ত্রোপচার পদ্ধতি।
ভার্টিব্রোপ্লাস্টি এবং কাইফোপ্লাস্টি
- ভার্টিব্রোপ্লাস্টি: এই পদ্ধতিতে ভাঙা কশেরুকায় একটি বিশেষ ধরনের সিমেন্ট ইনজেক্ট করা হয় যা হাড়কে শক্তিশালী করে।
- কাইফোপ্লাস্টি: এই পদ্ধতি ভার্টিব্রোপ্লাস্টির মতো, তবে এখানে ভাঙা কশেরুকাকে আগে পূর্ণ আকারে ফিরিয়ে আনা হয় তারপর সিমেন্ট ইনজেক্ট করা হয়।
স্পাইন কম্প্রেশন ফ্র্যাকচার প্রতিরোধ
- অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ: সুষম খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম এবং ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি গ্রহণ করে অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করা যায়।
- সুরক্ষা: পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কমাতে বাড়িতে কিছু পরিবর্তন আনা যায়।
- ভারী জিনিস তোলা এড়িয়ে চলা: ভারী জিনিস তোলা এড়িয়ে চলা উচিত।
মনে রাখবেন: স্পাইন কম্প্রেশন ফ্র্যাকচার একটি গুরুতর সমস্যা। যদি আপনার এই ধরনের কোনো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই একজন অর্থোপেডিক সার্জনের পরামর্শ নিন।