হৃদরোগ একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা যা হঠাৎ করেই ঘটতে পারে। যদি আপনি বা আপনার আশেপাশে কেউ হৃদরোগের লক্ষণ দেখতে পান, তাহলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
হৃদরোগের লক্ষণগুলি কী কী?
হৃদরোগের লক্ষণ ব্যক্তিভেদে আলাদা হতে পারে। সাধারণত দেখা যায়:
- বুকে চাপ বা ব্যথা: এটি একটি সাধারণ লক্ষণ। ব্যথাটি ধীরে ধীরে বা হঠাৎ করে শুরু হতে পারে।
- শ্বাসকষ্ট: শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, দম ফুলতে থাকা।
- বাম হাত, ঘাড় বা চোয়ালে ব্যথা: বুকের ব্যথা অনেক সময় বাম হাত, ঘাড় বা চোয়ালে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
- মাথা ঘোরা: মাথা ঘুরতে থাকা, চোখের সামনে অন্ধকার দেখা।
- বেহুশ হয়ে যাওয়া: কখনো কখনো হৃদরোগের কারণে ব্যক্তি বেহুশ হয়ে যেতে পারে।
- দুর্বলতা: শরীর দুর্বল লাগা, ক্লান্তি অনুভব করা।
হৃদরোগে আক্রান্ত হলে কী করবেন?
- শান্ত থাকুন: হঠাৎ করে আতঙ্কিত হবেন না।
- বিশ্রাম নিন: কোনো কাজ করবেন না, শুয়ে পড়ুন।
- নাইট্রোগ্লিসারিন: যদি আপনার সাথে নাইট্রোগ্লিসারিন থাকে, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেটা খান।
- ইমার্জেন্সি সেবা ডাকুন: দেরি না করে ৯৯৯ নম্বরে কল করুন বা নিকটস্থ হাসপাতালে যান।
ইমার্জেন্সি সেবায় কী করা হয়?
- পরীক্ষা-নিরীক্ষা: চিকিৎসকরা আপনার হৃদ্স্পন্দন, রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি পরীক্ষা করবেন।
- ইসিজি: আপনার হৃদয়ের কার্যকলাপ পরীক্ষা করার জন্য ইসিজি করা হবে।
- রক্ত পরীক্ষা: আপনার রক্তে কোনো অস্বাভাবিকতা আছে কি না তা পরীক্ষা করা হবে।
- চিকিৎসা: আপনার অবস্থার উপর নির্ভর করে চিকিৎসকরা বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা করবেন। এর মধ্যে রয়েছে:
- ওষুধ: ব্যথা কমানোর জন্য ওষুধ দেওয়া হবে।
- অক্সিজেন: শ্বাসকষ্ট কমানোর জন্য অক্সিজেন দেওয়া হবে।
- অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি: হৃদপিণ্ডের ধমনীতে ব্লক থাকলে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করা হতে পারে।
- বাইপাস সার্জারি: গুরুতর ক্ষেত্রে বাইপাস সার্জারি করা হতে পারে।
হৃদরোগ প্রতিরোধে কী করবেন?
- সুষম খাবার খান: ফল, শাকসবজি, পুরোধান ইত্যাদি খান।
- নিয়মিত ব্যায়াম করুন: প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন।
- ধূমপান এবং মদ্যপান পরিহার করুন।
- রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
- মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন।
কেন দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া জরুরি?
হৃদরোগ একটি জরুরি অবস্থা। যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা নেওয়া হবে, তত কম জটিলতা হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
মনে রাখবেন, হৃদরোগের লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।