বাংলাদেশে প্রচলিত ক্যান্সারের ধরন: এক নজরে

বাংলাদেশে ক্যান্সার একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার দেশের মানুষকে আক্রান্ত করছে। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বাংলাদেশে প্রচলিত ক্যান্সারের বিভিন্ন ধরন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

বাংলাদেশে সর্বাধিক প্রচলিত ক্যান্সারের ধরন

বাংলাদেশে কিছু নির্দিষ্ট ধরনের ক্যান্সার অন্যান্যের তুলনায় বেশি দেখা যায়। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

  • ফুসফুসের ক্যান্সার: ধূমপান এই ধরনের ক্যান্সারের প্রধান কারণ। বাংলাদেশে ধূমপানের প্রবণতা বেশি থাকায় ফুসফুসের ক্যান্সারের হারও উচ্চ।
  • স্তন ক্যান্সার: মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ ক্যান্সার। স্তন ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়লে এই ক্যান্সারের হার কমানো সম্ভব।
  • কোলন ক্যান্সার: বৃহদন্ত্রের এই ক্যান্সার অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে হতে পারে।
  • লিভার ক্যান্সার: ভাইরাল হেপাটাইটিস বি ও সি, অ্যালকোহল সেবন এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস লিভার ক্যান্সারের প্রধান কারণ।
  • মুখ গলার ক্যান্সার: ধূমপান এবং পান খাওয়া মুখ ও গলার ক্যান্সারের প্রধান কারণ।
  • রক্তের ক্যান্সার: লিউকেমিয়া, লিম্ফোমা এবং মাইয়েলোমা এই ধরনের ক্যান্সারের অন্তর্ভুক্ত।

ক্যান্সারের কারণ

ক্যান্সারের সঠিক কারণ এখনো পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে জানা যায়নি। তবে কিছু কারণ ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • ধূমপান: ধূমপান ফুসফুস, মুখ, গলা এবং অন্যান্য অঙ্গের ক্যান্সারের প্রধান কারণ।
  • মদ্যপান: অতিরিক্ত মদ্যপান যকৃতের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত, লবণাক্ত খাবার এবং কম ফল ও শাকসবজি খাওয়া ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • শারীরিক অক্রিয়তা: নিয়মিত ব্যায়াম না করলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
  • মাত্রাতিরিক্ত ওজন: মাত্রাতির্ত ওজন স্তন, কোলন এবং অন্যান্য ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • পরিবেশগত কারণ: বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ, বিকিরণ ইত্যাদি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • বংশগত কারণ: কখনো কখনো ক্যান্সার পরিবারে চলে আসে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ

ক্যান্সার প্রতিরোধে সুস্থ জীবনযাপন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানো সম্ভব:

  • ধূমপান মদ্যপান পরিহার: ধূমপান এবং মদ্যপান ক্যান্সারের প্রধান কারণ। তাই এগুলো পরিহার করা উচিত।
  • সুষম খাদ্য গ্রহণ: ফল, শাকসবজি, পুরোধান ইত্যাদি খাবার বেশি করে খাওয়া উচিত।
  • নিয়মিত ব্যায়াম: সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট মধ্যম তীব্রতার ব্যায়াম করতে হবে।
  • স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা: অতিরিক্ত ওজন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা উচিত।
  • নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার শনাক্ত করা সম্ভব।

মনে রাখবেন, প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার শনাক্ত করা হলে চিকিৎসা সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

আপনার স্বাস্থ্যের যত্ন নিন এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে থাকুন।