স্তন ক্যান্সার: নারীদের স্বাস্থ্যের একটি বড় হুমকি

স্তন ক্যান্সার হল নারীদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ ক্যান্সার। স্তনের কোষগুলি যখন অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায় এবং একটি টিউমার তৈরি করে, তখন এই রোগটি হয়। এই টিউমারটি ক্রমশ বড় হয়ে স্তনের অন্যান্য অংশে এবং শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

স্তন ক্যান্সারের কারণ

স্তন ক্যান্সারের সঠিক কারণ এখনও পর্যন্ত পুরোপুরি জানা যায়নি। তবে কিছু কারণ এই রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে, যেমন:

  • বয়স: বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়ে।
  • পারিবারিক ইতিহাস: যাদের পরিবারে স্তন ক্যান্সারের ইতিহাস আছে, তাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
  • মেনোপজের পর হরমোন থেরাপি: মেনোপজের পর হরমোন থেরাপি নেওয়া মহিলাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি।
  • মাত্রাধিক মদ্যপান: মাত্রাধিক মদ্যপান স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
  • স্থূলতা: স্থূলতাও স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
  • মাসিক ঋতু শুরুর বয়স: যাদের মাসিক ঋতু শুরুর বয়স কম, তাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি।
  • মেনোপজের বয়স: যাদের মেনোপজের বয়স বেশি, তাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি।
  • শিশু না জন্মানো বা বুকের দুধ না খাওয়ানো: যারা কখনো গর্ভবতী হননি বা বুকের দুধ খাওয়াননি, তাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি।

স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ

স্তন ক্যান্সারের লক্ষণগুলি ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। কিছু সাধারণ লক্ষণ হল:

  • স্তনে গল বা পিণ্ড অনুভূত হওয়া
  • স্তনের আকার বা আকৃতির পরিবর্তন
  • স্তনবৃন্ত থেকে স্রাব আসা
  • স্তনের ত্বকে লালচে দাগ বা ফোসকা দেখা দেওয়া
  • স্তনের ত্বকের টেক্সচার পরিবর্তন হওয়া
  • স্তনবৃন্তের ভিতরে ঢুকে যাওয়া

স্তন ক্যান্সারের নির্ণয়

স্তন ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়, যেমন:

  • ম্যামোগ্রাম: স্তনের এক্স-রে
  • আল্ট্রাসাউন্ড: শব্দ তরঙ্গ ব্যবহার করে স্তনের ছবি তোলা
  • বায়োপসি: স্তন থেকে একটি ছোট টিস্যু নিয়ে পরীক্ষা করা

স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসা

স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসা রোগীর বয়স, স্বাস্থ্য এবং ক্যান্সারের ধরন এবং পর্যায়ের উপর নির্ভর করে। সাধারণত স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসায় অন্তর্ভুক্ত থাকে:

  • সার্জারি: ক্যান্সারযুক্ত টিউমার অপসারণ
  • রেডিওথেরাপি: রেডিয়েশন ব্যবহার করে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা
  • কেমোথেরাপি: ওষুধ ব্যবহার করে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা
  • হরমোন থেরাপি: হরমোনকে লক্ষ্য করে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করা
  • টার্গেটেড থেরাপি: ক্যান্সার কোষের নির্দিষ্ট অংশকে লক্ষ্য করে চিকিৎসা করা

স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ

স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে:

  • স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন: সুষম খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা।
  • ধূমপান ত্যাগ: ধূমপান স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
  • মদ্যপান পরিমিত করা: মাত্রাধিক মদ্যপান স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
  • নিয়মিত স্ব-পরীক্ষা: নিজে নিজে স্তন পরীক্ষা করা এবং কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া।