জন্মগত মুখের বিকৃতির চিকিৎসা: বিস্তারিত জানুন

জন্মগত মুখের বিকৃতি শিশুদের মধ্যে একটি সাধারণ সমস্যা। এটি শিশুর জন্মের সময়ই দেখা দিতে পারে এবং শিশুর চেহারা এবং কার্যকারিতা উভয়কেই প্রভাবিত করতে পারে। যদিও এই সমস্যাটি দেখতে ভয়ানক লাগতে পারে, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাহায্যে এটি সফলভাবে চিকিৎসা করা সম্ভব।

জন্মগত মুখের বিকৃতির কারণ

জন্মগত মুখের বিকৃতির অনেক কারণ থাকতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে:

  • জিনগত কারণ: কিছু জন্মগত মুখের বিকৃতি জিনগত কারণে হয়।
  • ভ্রূণের বিকাশের সময়ের সমস্যা: ভ্রূণের বিকাশের সময় কোনো সমস্যা হলেও মুখের বিকৃতি হতে পারে।
  • মায়ের গর্ভকালীন সময়ের জটিলতা: মায়ের গর্ভকালীন সময়ের কিছু জটিলতা যেমন, ডায়াবেটিস, সংক্রমণ ইত্যাদি মুখের বিকৃতির কারণ হতে পারে।
  • অজানা কারণ: অনেক ক্ষেত্রে জন্মগত মুখের বিকৃতির কোনো স্পষ্ট কারণ পাওয়া যায় না।

জন্মগত মুখের বিকৃতির ধরন

জন্মগত মুখের বিকৃতির বিভিন্ন ধরন রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:

  • ক্লফট প্যালাট: এই ধরনের বিকৃতিতে তালুতে একটি ফাঁক থাকে।
  • ক্লফট লিপ: এই ধরনের বিকৃতিতে ওঠার উপর একটি ফাঁক থাকে।
  • ক্লফট লিপ এবং প্যালাট: এই ধরনের বিকৃতিতে ওঠার উপর এবং তালুতে একটি ফাঁক থাকে।
  • মাইক্রোগনাথিয়া: এই ধরনের বিকৃতিতে চিবুক খুব ছোট হয়।

জন্মগত মুখের বিকৃতির চিকিৎসা

জন্মগত মুখের বিকৃতির চিকিৎসা শিশুর বয়স, বিকৃতির ধরন এবং তীব্রতার উপর নির্ভর করে। সাধারণত, জন্মের পরপরই চিকিৎসা শুরু করা হয়। চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ যেমন, মুখ ও দাঁতের চিকিৎসক, প্লাস্টিক সার্জন, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ইত্যাদি দলবদ্ধভাবে কাজ করেন।

চিকিৎসার পদ্ধতিগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • সার্জারি: সার্জারি হল জন্মগত মুখের বিকৃতির চিকিৎসার প্রধান পদ্ধতি। সার্জারির মাধ্যমে ফাঁক বন্ধ করা হয় এবং মুখের আকৃতি স্বাভাবিক করা হয়।
  • অর্থোডন্টিক চিকিৎসা: দাঁতের বন্ধনী বা অন্য ধরনের অর্থোডন্টিক চিকিৎসার মাধ্যমে দাঁতের অবস্থান সঠিক করা হয়।
  • স্পিচ থেরাপি: ভাষা এবং বক্তৃতা সমস্যা দূর করার জন্য স্পিচ থেরাপি করা হয়।
  • শ্রবণ পরীক্ষা: ক্লফট প্যালাটের কারণে শ্রবণ সমস্যা হতে পারে। তাই শ্রবণ পরীক্ষা করা এবং প্রয়োজনে শ্রবণ সাহায্য ব্যবহার করা হয়।

চিকিৎসার পরে যত্ন

চিকিৎসার পরে শিশুকে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসকের নির্দেশ অনুযায়ী খাবার খাওয়া, দাঁত পরিষ্কার করা এবং অন্যান্য যত্ন নেওয়া উচিত।

সারসংক্ষেপ

জন্মগত মুখের বিকৃতি একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাহায্যে এটি সফলভাবে চিকিৎসা করা সম্ভব। শিশু যত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু করবে, তত তার পূর্ণ সুস্থতা আসার সম্ভাবনা বেশি।

 

শারীরিক সুস্থতার সাথে সাথে নিজের মানসিক সুস্থতার দিকেও গুরুত্ব দিচ্ছেনতো!

সুস্থতা বলতে শারীরিক সুস্থতার সাথে সাথে মানসিক সুস্থতাকেও বোঝায়। তাই সুস্থতার জন্য শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক সুস্থতাকেও গুরুত্ব দিতে হবে। কিন্তু শারীরিক সুস্থতাকে আমরা যতটা গুরুত্ব দেই মানসিক সুস্থতাকে আমরা ততটা গুরুত্ব দেই না। সময় মত যদি মানসিক চিকিৎসা করা হয় তাহলে মানসিক সমস্যাগুলো এত বড় হয় না। যেমন : একজন অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার এ ভুগছেন, তিনি যদি সঠিক ট্রিটমেন্ট না নেন তাহলে তা কয়েক বছর পর ওসিডি তে রূপ নিতে পারে এবং এমনটা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে আরও ভয়ানক মানসিক সমস্যায় পড়তে পারেন। প্রথম দিকে তিনি যদি একজন কাউন্সিলারের সাহায্য নিতেন তাহলে হয়তো তার কোন ওষধই লাগতো না শুধু কাউন্সিলিংই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু কাউন্সিলর এর কাছে না গিয়ে ভেতরে মানসিক রোগ পুষে রাখায় তার সমস্যা আরো জটিল হয়ে গেল এবং পরবর্তীতে তার সেরে উঠতে অনেক ওষুধ এবং জটিলতার মধ্য দিয়ে যেতে হতে পারে।

তাই শারীরিক অসুস্থতায় যেমন আমরা ডাক্তারের সাহায্য নেই তেমনি মানসিক অসুস্থতায়ও আমাদের উচিত মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া।
আজকাল আমরা অনেকেই মানসিক রোগের চিকিৎসায় কাউন্সিলিং শব্দটা শুনে থাকি। কাউন্সিলিং সম্পর্কে অনেকেরই অনেক ভুল ধারণা থাকে। তাহলে আমরা প্রথমে জেনে নেই কাউন্সিলিং কি?

#কাউন্সিলিং কি?
কাউন্সিলিং হল কাউন্সিলর ও কাউন্সিলিং সেবা গ্রহীতার (client) মধ্যকার একটি পেশাদারী সম্পর্ক। এখানে ক্লায়েন্টের চিন্তা, আবেগ সম্বন্ধীয়, ও আচরণগত যেসব সমস্যা আছে সেগুলো নিয়ে কাজ করা হয়। এখানে কাউন্সিলর তার সেবা গ্রহীতাকে এমনভাবে সহায়তা করেন যাতে সেবা গ্রহীতা তার মনোসামাজিক কর্মক্ষমতার সর্বোপরি কাম্য অবস্থায় যেতে পারেন এবং সমস্যার সমাধান নিজেই করতে পারেন।
কাউন্সিলিং সেবায় সেবা গ্রহীতা নিজের মনোভাব, চিন্তা, অনুভূতি, গোপনীয়তার সাথে কাউন্সিলর এর কাছে প্রকাশ করতে পারেন। এবং যেহেতু কাউন্সিলর নিরপেক্ষ এবং পক্ষপাতিত্বহীনভাবে তার কথা শুনেন সেহেতু সেবা গ্রহীতাও নির্দ্বিধায় তার মনের ভাব প্রকাশ করতে পারেন।

#কখন কাউন্সেলিং সেবা নিব?
অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে কখন আমরা কাউন্সেলিং সেবা নিব বা কারা কাউন্সেলিং সেবা নিবে?
আসলে আমরা যে কেউই জীবনের যে কোন মুহূর্তে কাউন্সেলিং সেবা নিতে পারি। এর জন্য যে মানসিক ভাবে প্রচন্ড অসুস্থ হতে হবে এমনটি নয়। নিজেদের মানসিক সুস্থতা বজায় রাখার জন্যও কাউন্সিলিংয়ের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। কেউ যদি মনে করে জীবনে কিছু দক্ষতা অর্জন করবে, যেমন: নন ভায়োলেন্ট কমিউনিকেশন, আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি, নিজের সম্পর্কের উন্নতি, মানসিক চাপ সঠিকভাবে মোকাবেলা করার দক্ষতা, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, সঠিক প্যারেন্টিং স্টাইল- সেক্ষেত্রেও কাউন্সিলর এ সকল দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করতে পারেন।
সুতরাং কারো যদি কোন চিন্তা, আবেগ সম্বন্ধীয়, অথবা আচরণগত কোন সমস্যা দেখা দেয় যার কারণে তার দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব পড়ে অথবা জীবনে কোন মানসিক দক্ষতা অর্জনের প্রয়োজন পড়ে তাহলে কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে উপকৃত হতে পারেন।

#কাউন্সিলিং কেন প্রয়োজন?
জীবনের অনেক ক্ষেত্রেই কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে উপকৃত হওয়া সম্ভব। সাধারণত যে সকল ক্ষেত্রে কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে উপকৃত হওয়া যায় তা নিচে তুলে ধরা হলো –

  • চিন্তা সম্বন্ধীয় সমস্যা
    অনেক সময় অনেকের চিন্তার ধরন অনেক বেশি নেতিবাচক হয়। বিশেষ করে ডিপ্রেশনের ক্ষেত্রে। যেমন আপনি কাউকে ফোন দিলেন সে কোন কারণে ফোন ধরতে পারল না। যে ব্যক্তি ডিপ্রেশনে আছে সে এ ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে মনে মনে ধরে নিতে পারে তার ফোন উপেক্ষা করল। সে তখন অন্যান্য সম্ভাবনা গুলো দেখতে চাই না। যেমন এমনও তো হতে পারে যে, যাকে ফোন দেওয়া হল সে হয়তো তখন ব্যস্ত ছিল অথবা তার ফোন সাইলেন্ট ছিল। যাদের চিন্তা নেতিবাচক তারা ঘটনার ইতিবাচক সম্ভাবনাগুলো দেখতে চাই না। কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে এ ধরনের নেতিবাচক চিন্তা গুলো পরিবর্তন করা সম্ভব।
  • আবেগ সম্বন্ধীয় সমস্যা :
    অনেক সময় অনেকে নিজের আবেগ সুন্দরভাবে প্রকাশ করতে পারে না। অন্যের আবেগের সাথে সাথে নিজের আবেগও ঠিক মতন বুঝতে পারে না। কেউ কেউ হয়তো অল্পতে রেগে যায় আবার কেউ কেউ হয়তো অনেক দুঃখেও নিজের কষ্টগুলোকে আটকে রাখে। এ সকল ক্ষেত্রে কাউন্সিলিং সেবা তার নিজের আবেগ বুঝতে ও প্রকাশ করতে এবং অন্যের আবেগ বুঝতে ও অন্যের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে সহযোগিতা করতে পারে।
  •  আচরণগত সমস্যা :
    কারো যদি আচরণগত সমস্যা থাকে, যেমন: নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক এর চেয়ে বেশি উদ্বেগ অনুভব করা, অতিরিক্ত ভয়, রাগের কারনে হঠাৎ বিস্ফোরণ, ময়লার ভয়ে বারবার হাত ধোয়া, ইত্যাদি তাহলে কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে উপকৃত হতে পারেন।
  • মানসিক চাপ :আমাদের প্রত্যেকের জীবনে কমবেশি মানসিক চাপ থাকে। সাধারণত এ সকল মানসিক চাপগুলো আমরা নিজেরাই সামলে উঠতে পারি। আবার অনেক সময় সামলাতে না পেরে দিশেহারা হয়ে পরি। এ সকল মানসিক চাপ কিভাবে সঠিকভাবে মোকাবেলা করতে হয় সেই দক্ষতা যদি আমাদের জানা থাকে তাহলে জীবনধারণ অনেকটাই সহজ হয়ে যায়।
  • সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমস্যা হলে :
    অনেক সময় দেখা যায় কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আমরা খুব দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যায়। এ সকল ক্ষেত্রে কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহযোগিতা করা হয়।

উপরোক্ত সমস্যাগুলো ছাড়াও আরো অনেক ধরনের ক্ষেত্রেই কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে উপকৃত হওয়া যায়। যেমন: সন্তান লালন পালনে সঠিক পদ্ধতি, মাদকাসক্তি থেকে বের হয়ে আসা, ঘুমের সমস্যা, আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি, হীনমন্যতা দূর, নিজের সম্পর্ক গুলোর উন্নতি ইত্যাদি।

শিশুদের মূত্রনালীর সংক্রমণ: কারণ, লক্ষণ এবং চিকিৎসা

শিশুদের মধ্যে মূত্রনালীর সংক্রমণ একটি সাধারণ সমস্যা। সাধারণত ব্যাকটেরিয়া মূত্রনালীতে প্রবেশ করে এই সংক্রমণ ঘটে। যদিও মূত্রনালীর সংক্রমণ  অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে সহজেই চিকিৎসা করা যায়, তবে জটিল ক্ষেত্রে সার্জারিও প্রয়োজন হতে পারে।

কারণ

  • ব্যাকটেরিয়া: মূত্রনালীতে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করার ফলে সংক্রমণ হয়। সাধারণত, অন্ত্র থেকে ব্যাকটেরিয়া মূত্রনালীতে প্রবেশ করে।
  • মূত্রনালীর গঠনগত সমস্যা: জন্মগত কোনো গঠনগত সমস্যা বা মূত্রনালীর সংকীর্ণতা থাকলে প্রস্রাব সঠিকভাবে বের হতে পারে না এবং সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
  • মূত্রনালীর বাধা: মূত্রনালীতে পাথর বা টিউমার থাকলে প্রস্রাবের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হতে পারে এবং সংক্রমণ হতে পারে।

লক্ষণ

শিশুদের মূত্রনালীর সংক্রমণের লক্ষণ প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় বোঝা কঠিন হতে পারে। তবে সাধারণত নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি দেখা যায়:

  • জ্বর: উচ্চ জ্বর হতে পারে।
  • ঘন ঘন প্রস্রাব: প্রস্রাব করার ইচ্ছা অনেক বার হতে পারে।
  • প্রস্রাব করার সময় ব্যথা: প্রস্রাব করার সময় জ্বালাপোড়া অনুভব করতে পারে।
  • মূত্রে রক্ত: কখনও কখনও মূত্রে রক্ত দেখা যেতে পারে।
  • পেটে ব্যথা: পেটে ব্যথা অনুভব করতে পারে।
  • বমি বমি ভাব বা বমি: কখনও কখনও বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে।
  • খাবার অনীহা: খাবার খেতে ইচ্ছা না করা।
  • অন্যান্য: অস্বস্তি, কাঁপুনি, অবসাদগ্রস্ত থাকা ইত্যাদি।

নির্ণয়

ডাক্তার শিশুর শারীরিক পরীক্ষা করবেন এবং লক্ষণগুলি সম্পর্কে জানতে চাইবেন। এরপর নিম্নলিখিত পরীক্ষা করতে পারেন:

  • মূত্র পরীক্ষা: মূত্রে সংক্রমণের লক্ষণ দেখতে।
  • রক্ত পরীক্ষা: সংক্রমণের তীব্রতা মাপতে।
  • আল্ট্রাসাউন্ড: মূত্রনালীর গঠন পরীক্ষা করতে।
  • মূত্রের কালচার: কোন ধরনের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ করেছে তা জানতে।

চিকিৎসা

মূত্রনালীর সংক্রমণের চিকিৎসা সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে করা হয়। ডাক্তার সংক্রমণের ধরন এবং তীব্রতার উপর ভিত্তি করে অ্যান্টিবায়োটিকের ধরন এবং মাত্রা নির্ধারণ করবেন।

সার্জারি কখন প্রয়োজন হতে পারে?

  • মূত্রনালীর গঠনগত সমস্যা: যদি মূত্রনালীর কোনো জন্মগত সমস্যা থাকে, তাহলে সার্জারি প্রয়োজন হতে পারে।
  • মূত্রনালীতে বাধা: মূত্রনালীতে পাথর বা টিউমার থাকলে সার্জারি করে তা অপসারণ করতে হয়।

জটিলতা

যদি মূত্রনালীর সংক্রমণ চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে কিডনি, মূত্রনালী এবং অন্যান্য অঙ্গে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। এছাড়াও, সেপসিস নামক একটি জীবনঘাতী অবস্থা হতে পারে।

প্রতিরোধ

  • সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা: হাত সবসময় পরিষ্কার রাখা, প্রস্রাব করার পর সামনের দিক থেকে পিছনের দিকে মুছা ইত্যাদি।
  • প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা: প্রচুর পরিমাণে পানি পান করলে মূত্রনালী পরিষ্কার থাকে এবং সংক্রমণের ঝুঁকি কমে।
  • ঢিলাঢালা পোশাক পরা: টাইট পোশাক পরিধান না করা।
  • জন্মগত সমস্যা থাকলে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া: যদি শিশুর জন্মগত কোনো মূত্রনালীর সমস্যা থাকে, তাহলে নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

উপসংহার:

শিশুদের মূত্রনালীর সংক্রমণ একটি সাধারণ সমস্যা হলেও অবহেলা করা উচিত নয়। যদি আপনার শিশু উপরের কোনো লক্ষণ দেখায়, তাহলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

ক্যান্সার: এক নজরে

ক্যান্সার, একটি শব্দ যা শুনলেই আমাদের মনে আতঙ্ক জাগে। কিন্তু আজকের সময়ে ক্যান্সার আর অসাধ্য রোগ নয়। যথাযথ চিকিৎসা এবং যত্নের মাধ্যমে ক্যান্সার নিরাময় সম্ভব। ক্যান্সার আসলে কী এবং কেন হয়, তা জানা খুবই জরুরি।

ক্যান্সার কী?

ক্যান্সার হল শরীরের কোষের একটি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। আমাদের শরীরের কোষ নিয়মিত বিভাজিত হয় এবং মারা যায়। কিন্তু ক্যান্সার কোষ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই কোষগুলি ক্ষতিকারক টিউমার তৈরি করে এবং শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

ক্যান্সারের ধরন

ক্যান্সার শরীরের যে কোনো অংশে হতে পারে। ক্যান্সারের ধরন নির্ভর করে কোন কোষ থেকে ক্যান্সার শুরু হয়েছে তার উপর। কিছু সাধারণ ধরনের ক্যান্সার হল:

  • ফুসফুসের ক্যান্সার: ধূমপান এই ধরনের ক্যান্সারের প্রধান কারণ।
  • স্তন ক্যান্সার: মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ ক্যান্সার।
  • কোলন ক্যান্সার: বৃহদন্ত্রের ক্যান্সার।
  • প্রোস্টেট ক্যান্সার: পুরুষদের মধ্যে সাধারণ একটি ধরনের ক্যান্সার।
  • রক্ত ক্যান্সার: রক্তের কোষের ক্যান্সার।

ক্যান্সারের কারণ

ক্যান্সারের সঠিক কারণ এখনো পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে জানা যায়নি। তবে কিছু কারণ ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। এগুলো হল:

  • ধূমপান: ধূমপান ফুসফুস, মুখ, গলা এবং অন্যান্য অঙ্গের ক্যান্সারের প্রধান কারণ।
  • মদ্যপান: অতিরিক্ত মদ্যপান যকৃতের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত, লবণাক্ত খাবার এবং কম ফল ও শাকসবজি খাওয়া ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • শারীরিক অক্রিয়তা: নিয়মিত ব্যায়াম না করলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
  • মাত্রাতিরিক্ত ওজন: মাত্রাতিরিক্ত ওজন স্তন, কোলন এবং অন্যান্য ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • পরিবেশগত কারণ: বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ, বিকিরণ ইত্যাদি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • বংশগত কারণ: কখনো কখনো ক্যান্সার পরিবারে চলে আসে।

ক্যান্সারের লক্ষণ

ক্যান্সারের লক্ষণ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। কিছু সাধারণ লক্ষণ হল:

  • অস্বাভাবিক গন্ড বা ফোঁস্কা
  • ওজন কমে যাওয়া
  • ক্লান্তি
  • জ্বর
  • রক্তপাত
  • শ্বাসকষ্ট
  • হজমে সমস্যা

যদি আপনার এই ধরনের কোনো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

মনে রাখবেন, প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার শনাক্ত করা হলে চিকিৎসা সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

আপনার স্বাস্থ্যের যত্ন নিন এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে থাকুন।

কোলন ক্যান্সার: অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার একটি গুরুতর ফলাফল

কোলন ক্যান্সার বা বৃহদন্ত্রের ক্যান্সার একটি গুরুতর রোগ যা বৃহদন্ত্রের কোষগুলির অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে হয়। বৃহদন্ত্র আমাদের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যা খাদ্য পরিশোধন ও পানি শোষণে সাহায্য করে। এই ক্যান্সার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায় এবং অন্যান্য অঙ্গেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

কোলন ক্যান্সারের কারণ

কোলন ক্যান্সারের সঠিক কারণ এখনও পর্যন্ত পুরোপুরি জানা যায়নি। তবে কিছু কারণ এই রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে, যেমন:

  • অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: অতিরিক্ত পরিমাণে লাল মাংস, প্রক্রিয়াজাত মাংস, এবং পরিশোধিত শর্করাযুক্ত খাবার খাওয়া কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। অন্যদিকে, ফাইবারযুক্ত খাবার যেমন ফল, শাকসবজি এবং সম্পূর্ণ শস্য খাওয়া এই ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
  • শারীরিক অক্রিয়তা: নিয়মিত ব্যায়াম না করা কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
  • স্থূলতা: অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
  • পরিবারিক ইতিহাস: যাদের পরিবারে কোলন ক্যান্সারের ইতিহাস আছে, তাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
  • ইনফ্ল্যামেটরি বোয়েল ডিজিজ: ক্রোন’স ডিজিজ এবং আলসারেটিভ কোলাইটিসের মতো ইনফ্ল্যামেটরি বোয়েল ডিজিজ কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
  • বয়স: বয়স বাড়ার সাথে সাথে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়ে।

কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ

কোলন ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো লক্ষণ নাও দেখা দিতে পারে। তবে রোগটি এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে:

  • মলের রঙে পরিবর্তন
  • মলে রক্ত দেখা
  • কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া
  • পেটে ব্যথা বা অস্বস্তি
  • ওজন কমে যাওয়া
  • ক্লান্তি

কোলন ক্যান্সারের নির্ণয়

কোলন ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়, যেমন:

  • কোলোনোস্কোপি: একটি পাতলা নল ব্যবহার করে বৃহদন্ত্র পরীক্ষা করা
  • মল পরীক্ষা: মলে রক্তের উপস্থিতি পরীক্ষা করা
  • সিটি স্ক্যান: বৃহদন্ত্রের ছবি তোলা

কোলন ক্যান্সারের চিকিৎসা

কোলন ক্যান্সারের চিকিৎসা ক্যান্সারের ধরন, পর্যায় এবং রোগীর স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে। সাধারণত চিকিৎসায় অন্তর্ভুক্ত থাকে:

  • সার্জারি: ক্যান্সারযুক্ত অংশ অপসারণ করা
  • কেমোথেরাপি: ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করার জন্য ওষুধ ব্যবহার করা
  • রেডিওথেরাপি: রেডিয়েশন ব্যবহার করে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা

কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ

কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে:

  • স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: ফাইবারযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া এবং লাল মাংস, প্রক্রিয়াজাত মাংস এবং পরিশোধিত শর্করাযুক্ত খাবার কম খাওয়া।
  • নিয়মিত ব্যায়াম: সপ্তাহে কমপক্ষে 150 মিনিট মধ্যম তীব্রতার ব্যায়াম করা।
  • স্থূলতা প্রতিরোধ: স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা।
  • কোলোনোস্কোপি: নির্দিষ্ট বয়সের পর থেকে নিয়মিত কোলোনোস্কোপি করানো।

উপসংহার:

কোলন ক্যান্সার একটি গুরুতর রোগ, তবে প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করলে এটি সুচিকিৎসাযোগ্য। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর মাধ্যমে কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব।

মনে রাখবেন:

  • এই তথ্যটি শুধুমাত্র সাধারণ তথ্যের উদ্দেশ্যে এবং এটি কোনো চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়।
  • কোনো ধরনের রোগের জন্য সঠিক নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

আপনার স্বাস্থ্যের যত্ন নিন।

ক্যান্সার নির্ণয়: সঠিক সময়ে সঠিক পরীক্ষা

ক্যান্সার, এমন একটি রোগ যা শুনলেই অনেকের মনে আতঙ্ক জাগে। কিন্তু আজকের সময়ে ক্যান্সার আর অসাধ্য রোগ নয়। যথাযথ চিকিৎসা এবং যত্নের মাধ্যমে ক্যান্সার নিরাময় সম্ভব। আর এই নিরাময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হল, ক্যান্সারকে প্রাথমিক পর্যায়েই শনাক্ত করা।

ক্যান্সার নির্ণয়ের পরীক্ষা

বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের জন্য বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা করা হয়। সাধারণত নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলি করা হয়:

  • শারীরিক পরীক্ষা: চিকিৎসক রোগীর শরীর পরীক্ষা করে কোনো অস্বাভাবিকতা আছে কি না তা দেখেন।
  • ইমেজিং পরীক্ষা: এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, এমআরআই, পেট স্ক্যান ইত্যাদির মাধ্যমে শরীরের ভিতরের অংশ পরীক্ষা করা হয়।
  • বায়োপসি: শরীরের একটি অংশ থেকে কোষের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষাটি ক্যান্সার নিশ্চিত করার জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য।
  • রক্ত পরীক্ষা: রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যান্সারের কিছু নির্দিষ্ট মার্কার খুঁজে বের করা হয়।
  • অন্যান্য পরীক্ষা: কোনো কোনো ক্ষেত্রে অন্যান্য পরীক্ষা যেমন, ইএনটি পরীক্ষা, গ্যাস্ট্রোস্কোপি ইত্যাদি করা হতে পারে।

প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার নির্ণয়ের উপকারিতা

প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার শনাক্ত করা হলে চিকিৎসা করা অনেক সহজ এবং সফল হয়। কারণ এই সময় ক্যান্সার কোষ শরীরের অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়েনি। প্রাথমিক শনাক্তকরণের কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা নিম্নরূপ:

  • সফল চিকিৎসা: প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার শনাক্ত হলে চিকিৎসা করা অনেক সহজ এবং সফল হয়।
  • কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা করা হলে চিকিৎসার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম হয়।
  • জীবনযাত্রার মান উন্নতি: প্রাথমিক চিকিৎসার মাধ্যমে ক্যান্সার রোগীরা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে।

ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণগুলি

ক্যান্সারের লক্ষণগুলি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে এবং শরীরের কোন অংশে ক্যান্সার হয়েছে তার উপর নির্ভর করে। কিছু সাধারণ লক্ষণ হল:

  • অস্বাভাবিক গন্ড বা ফোলা: শরীরের যে কোনো জায়গায় অস্বাভাবিক গন্ড বা ফোলা দেখা দিলে তা ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
  • দীর্ঘস্থায়ী কাশি বা শ্বাসকষ্ট: যদি তিন সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে কাশি থাকে এবং এটি সাধারণ ওষুধে ভালো না হয়, তবে এটি ফুসফুসের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
  • অনিয়মিত ওজন হ্রাস: কোনো কারণ ছাড়াই দ্রুত ওজন কমে যাওয়া ক্যান্সারের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।
  • জ্বর: ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের সবচেয়ে সাধারণ একটি উপসর্গ হচ্ছে জ্বর।
  • ক্লান্তি: শারীরিক পরিশ্রম ছাড়াই দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি অনুভব করা একটি গুরুতর লক্ষণ।
  • রক্তপাত: মল, প্রস্রাব বা অন্য কোনো স্থান থেকে অস্বাভাবিক রক্তপাত ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
  • পেটে ব্যথা: পেটে ব্যথা, পেট ফোলা, বা হজমে সমস্যা ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
  • ত্বকের পরিবর্তন: ত্বকের রঙ বা আকারে পরিবর্তন, তিলের আকার বা রঙে পরিবর্তন ইত্যাদি ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
  • হাড়ে ব্যথা: হাড়ে ব্যথা, ফোলা বা ভাঙা হাড় ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
  • গিলতে সমস্যা: খাবার গিলতে সমস্যা হওয়া বা গলায় কিছু আটকে থাকার অনুভূতি হওয়া ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।

উপসংহার

ক্যান্সার একটি জটিল রোগ এবং এর চিকিৎসাও জটিল। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার শনাক্ত করা হলে চিকিৎসা সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তাই নিজের শরীরের প্রতি সচেতন থাকুন এবং কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই চিক

World suicide prevention day-“Creating Hope Through Action”

suicide prevention

World suicide prevention day-“Creating Hope Through Action”

Dr. Shaafi Raaisul Mahmood

Writer:
Dr. Shaafi Raaisul Mahmood
MBBS, MD (Psychiatry)
Attending Consultant
Psychiatry & Mental Health At Evercare Hospital Chattogram

World suicide prevention day is established by International Association of Suicide Prevention in conjunction with World Health organization (WHO).

This day is celebrated every year on September 10th.

The goals of this celebration are-

  • To draw attention to this issue.
  • To implement actions to prevent suicide.
  • To increase the awareness among communities, governments and organizations.
  • To reduce stigma.
  • To provide a singular message that suicide is preventable.

According to the report of World Health organization (WHO), there are currently more than 700000 suicides per year worldwide and each suicide profoundly effects many more people .

So  suicide prevention is a public health priority, and to reduce the suicide mortality rate urgent action is required.

There are many causes of suicide and among them depression is the prominent one.

“Creating Hope Through Action” is the triennial theme for the World Suicide Prevention Day from 2021-2023. This theme reflects that through actions we can prevent suicide, encourage hope and to understand that suicide is not a solution, there is an alternative to suicide.

By creating hope through action, we can signal to people experiencing suicidal thoughts that there is hope and that we care and want to support them. It also suggests that our actions, no matter how big or small, may provide hope to those who are struggling. (Source- WHO)

WHO is continuing work with its partners to support countries to take concrete measures in this direction.

 

 

 

 

বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস- “কর্মের মাধ্যমে আশা তৈরি করা”

ডাঃ শাফী রাইসুল মাহমুদ
এমবিবিএস, এমডি (সাইকিয়াট্রি)
এ্যাটেন্ডিং কনসালটেন্ট – সাইকিয়াট্রি

 

বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সাথে যৌথভাবে আন্তর্জাতিক আত্মহত্যা প্রতিরোধ সংস্থা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়। এই দিনটি প্রতি বছর ১০ই সেপ্টেম্বর পালিত হয়। এই উদযাপনের লক্ষ্য হল-

• এই সমস্যার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা।
• আত্মহত্যা প্রতিরোধে পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা।
• সম্প্রদায়, সরকার এবং সংস্থাগুলির মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
• মানসিক সমস্যা ও আত্মহত্যার কারণগুলোর প্রতি বিরূপ দৃষ্টিভঙ্গি কমিয়ে আনা।
• আত্মহত্যা যে প্রতিরোধযোগ্য তার একটি একক বার্তা প্রদান করা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) রিপোর্ট অনুসারে, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর ৭ লাখ এরও বেশি আত্মহত্যা হয় এবং প্রতিটি আত্মহত্যা আরও অনেক মানুষকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। তাই আত্মহত্যা প্রতিরোধ একটি জনস্বাস্থ্য অগ্রাধিকার, এবং আত্মহত্যার কারণে মৃত্যুর হার কমাতে জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন। আত্মহত্যার অনেক কারণ রয়েছে এবং তার মধ্যে বিষণ্নতা একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।

২০২১-২০২৩ সাল পর্যন্ত বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবসের ত্রিবার্ষিক থিম হল “কর্মের মাধ্যমে আশা তৈরি করা”। এই থিমটি প্রতিফলিত করে যে কর্মের মাধ্যমে আমরা আত্মহত্যা প্রতিরোধ করতে পারি, আশাকে উত্সাহিত করতে পারি এবং বুঝতে পারি যে আত্মহত্যা কোনও সমাধান নয়, আত্মহত্যার বিকল্প রয়েছে। কর্মের মাধ্যমে আশা তৈরি করার মাধ্যমে, আমরা আত্মঘাতীমূলক চিন্তার সম্মুখীন হওয়া লোকেদের কাছে ইঙ্গিত দিতে পারি যে অবশ্যই  আশা আছে এবং আমরা এই আশাকে গুরুত্ব দেই ও যত্ন করি এবং তাদের সমর্থন করতে চাই।

তাছাড়া আমাদের উদ্যোগ ও কর্ম গুলি যত বড় বা ছোট হোক না কেন, যারা সংগ্রাম করছে তা তাদের আশার আলো হতে পারে। (সূত্র- WHO) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তার অংশীদারদের সাথে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে যা দেশগুলিকে এইসব ক্ষেত্রে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে সহায়তা করে।

 

লিভার সুস্থ রাখতে যা করবেন

লিভার সুস্থ রাখতে যা করবেন

লিভার সুস্থ রাখতে যা করবেন

লিভার বা যকৃত মানবদেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ, যার প্রধান কাজ হলো রক্ত পরিশোধন ও ক্ষতিকর টক্সিন বের করে শরীরকে সুস্থ রাখা। লিভারের কার্যকারিতা হ্রাস পেলে ক্ষতিকর টক্সিন শরীরে জমে যায়। এতে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জীবনযাত্রায় অস্বাভাবিকতা ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে লিভারে নানা রোগ দেখা দেয়।

অতিরিক্ত ওজন, ডায়াবেটিস, রক্তে অতিরিক্ত মাত্রায় ট্রাইগ্লিসারাইড, এইচডিএল-এর মাত্রা হ্রাস বা বৃদ্ধি, কার্বোহাইড্রেট ও চর্বিজনিত সমস্যার কারণে লিভার ক্ষতিগ্রস্থ হয়। লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হলে কিছু উপসর্গ লক্ষ্য করা যায়, যেমন; চোখ হলুদ বর্ণের হয়ে যাওয়া, পেটে তরল জমে ফুলে যাওয়া, অতিরিক্ত ক্লান্তি-অবসাদ অনুভব করা, শরীরে ভিন্ন ভিন্ন স্থান চুলকানো, হঠাৎ হঠাৎ কথা ভুলে যাওয়া ইত্যাদি।

উল্লেখ্য, ভাইরাস বা জীবাণু আক্রমণে লিভার সংক্রমিত হলে লিভারে প্রদাহ হয়, যা লিভারের কার্যক্ষমতা হ্রাসে ভূমিকা রাখে। লিভার ইনফেকশন বা যকৃত সংক্রমণের সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ধরন হলো, হেপাটাইটিস ভাইরাস। আক্রান্ত ব্যক্তির মলের সংস্পর্শে আসলে বা দূষিত খাবার-পানি শরীরে গেলে ‘হেপাটাইটিস এ’ ছড়ায়। অন্যদিকে, হেপাটাইটিস বি এবং সি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রক্ত, বীর্যসহ অন্যান্য শারীরিক তরলের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করতে পারে। তাই লিভার ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার কোন উপসর্গ দেখা দিলে হেপাটাইটিস নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

বিশেষজ্ঞ পরামর্শ

বিশেষজ্ঞরা লিভার সুস্থ রাখার জন্য মূলত পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। লিভারকে সুস্থ রাখতে রসুন ভীষণ উপকারী। রসুনে অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ফাঙ্গাল জাতীয় উপাদান রয়েছে। নিয়মিত রসুন খেলে লিভার থেকে এক ধরনের বিশেষ এনজাইম তৈরি হয়, যা শরীর থেকে টক্সিন নিষ্কাশনে সাহায্য করে।

এছাড়া কাঁচা হলুদ, বিভিন্ন ফলমূল (বিশেষ করে আপেল, পেঁপে, আঙ্গুর), সবুজ শাকসবজি, সয়াবিন, ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য, আমলার রস, গ্রিন-টি, কফি ইত্যাদি খেলে বা পান করলে লিভার সুস্থ থাকে। তবে কিছু খাবার বর্জন করাও প্রয়োজন। যেমন; শর্করা জাতীয় খাবার কম খেতে হবে। যাদের মদ্যপানের অভ্যাস রয়েছে তাদের লিভার বিশেষ ক্ষতির ঝুঁকিতে রয়েছে।

এছাড়া সফট ড্রিংকস, চকোলেট, আইসক্রিম, ভাঁজাপোড়া খাবার, কাঁচা লবণ, বাটার-ঘি, অতিরিক্ত চিনি, রেডমিট ইত্যাদি খাবার যতটা সম্ভব বর্জন করা উচিৎ। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ মতে খাদ্যতালিকা নির্ধারণ করা যেতে পারে। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখলে ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, সামগ্রিক ওজনের ১০% কমানো গেলে ফ্যাটি লিভারের পরিমাণ ৩-৫% কমানো সম্ভব।

 

ডাঃ মুশফিকুল আবরার
সহযোগী কনসালটেন্ট
হেপাটোলজি, এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম

 

ব্যথাহীন প্রসব: কি, কেন, কীভাবে?

ব্যথাহীন প্রসব: কি, কেন, কীভাবে?

বলা হয়, একজন নারীর প্রসবকালীন ব্যথা নাকি শরীরের ৫৬টি হাড় একসাথে ভাঙার সমপরিমাণ হয়ে থাকে। প্রসবকালীন ব্যথার সঙ্গে অন্যকোন ব্যথার তুলনা করা যায় না। বর্তমান যুগে অধিকাংশ নারী এই ব্যথা নিয়ে আতঙ্কে থাকেন, ফলে বাড়তি স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও অনেকেই স্বাভাবিক প্রসব (নরমাল ডেলিভারি) এড়িয়ে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করাতে চান।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য বলছে, ১৯৯৫-৯৬ সালে আমেরিকায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্মদানের হার ছিল ২০.৭ শতাংশ, যা ২০১৪-১৫ সাল নাগাদ ৩২.২ শতাংশে এসে পৌঁছায়। বাংলাদেশে বর্তমান অস্ত্রোপচার জনিত প্রসব বা সিজারিয়ান অপারেশনের হার প্রায় ৪৫ শতাংশ, যার মূল কারণ নারীদের প্রসবকালীন ব্যথাভীতি।

তবে নারীদের জন্য স্বস্তির বার্তা নিয়ে এসেছে বিশ্বের চিকিৎসক-বিজ্ঞানীরা। চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রযুক্তির সঠিক বাস্তবায়নের ফলে ব্যথামুক্ত প্রসবও এখন সম্ভব। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে ইতোমধ্যেই অস্ত্রোপচার ছাড়া সন্তান প্রসব হচ্ছে, যা নিরাপদ ও ব্যথামুক্ত। যুগান্তকারী এই পদ্ধতিগুলোর মধ্যে এপিডিউরাল পদ্ধতি অন্যতম। এটি মূলত নরমাল ডেলিভারির মতোই একটি প্রক্রিয়া তবে ব্যথামুক্ত।

এ পদ্ধতিতে সাধারণত মেরুদণ্ডে কিছু ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে (সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের মতো) প্রসব চলাকালীন মায়েদের ব্যথামুক্ত রাখা হয়। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি স্বয়ংক্রিয় কম্পিউটারের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হয়। এই সময়ে মা হাঁটাচলা করতে, কথাবার্তা বলতে, এমনকি হালকা খাবারও খেতে পারেন। আবার সন্তানের নড়াচড়াও মা বুঝতে পারেন।

এই সময়ে ব্যথা কমানোর জন্য ওষুধ খেলে তা মা থেকে শিশুর রক্তে প্রবাহিত হওয়ার কোন ঝুঁকি নেই, নেই পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াও। এই পদ্ধতি ব্যবহারে দ্রুত ও দীর্ঘসময়ের জন্য ব্যথা কমানো যায়। এমনকি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজনে হলেও দ্রুত অবশ করা যায়। আবার স্বাভাবিক প্রসবের পর মা তাৎক্ষণিকভাবে নবজাতককে বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন।

ব্যথামুক্ত স্বাভাবিক প্রসবের জন্য অত্যাধুনিক প্রি-ডেলিভারি, ডেলিভারি ও পোস্ট-ডেলিভারি ব্যবস্থা, সিনক্রোনাইজড অভিজ্ঞ লেবার ও অ্যানেসথেসিয়া টিম, ক্লোজ মনিটরিং, জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থা ইত্যাদি সুবিধা থাকা আবশ্যক। তবেই সুস্থ ও নিরাপদ প্রসবের নিশ্চয়তা দেওয়া যায়। এই পদ্ধতিতে যেই ওষুধ ব্যবহৃত হয়, সেটি এপিডিউরাল অ্যানেসথেসিয়া নামে পরিচিত। মেরুদণ্ডের ভেতরে ছোট একটি ক্যাথেটার ঢুকিয়ে এই ওষুধ দেওয়া হয়।

এটি অনেকটা সাধারণত সিজারিয়ান অপারেশনের সময় ব্যবহৃত স্পাইনাল অ্যানেসথেসিয়া মতো, তবে এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটির জন্য চাই বিশেষ প্রশিক্ষণ। এছাড়াও, নবজাতকের নিবিড় পরিচর্যার জন্য বিশ্বমানের এনআইসিইউ ও ইনফেকশন কন্ট্রোল প্রোটোকল ঝুঁকিমুক্ত প্রসব নিশ্চিত করে।

বিগত বছরেগুলোর তুলনায় বর্তমানে প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে বেশ উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। পিছিয়ে নেই স্বাস্থ্য বা চিকিৎসা খাতেও। উন্নত প্রযুক্তি, অভিজ্ঞ চিকিৎসক, আধুনিক চিকিৎসা-সরঞ্জামের মাধ্যমে দেশেই এখন বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যাচ্ছে। এদের মধ্যে বন্দরনগরীর সর্ববৃহৎ হাসপাতাল এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম অন্যতম। বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের সকল ব্যবস্থাই রয়েছে এই হাসপাতালে। তাই প্রসব ব্যথা নিয়ে আতঙ্কিত নয়, বরং মাতৃত্বের আশীর্বাদে হোন উচ্ছ্বসিত।

ডাঃ সানজিদা কবির
কনসালটেন্ট- অবস্ এন্ড গাইনী
এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম।

যেমন হতে পারে স্ট্রোকের চিকিৎসা

যেমন হতে পারে স্ট্রোকের চিকিৎসা

বিশ্বব্যাপি স্ট্রোকে আক্রান্তের হার দিন দিন বেড়েই চলেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সচেতনতার অভাবেই স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশে বর্তমানে ১৫ থেকে ২০ লক্ষ রোগী স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছে বা ঝুঁকিতে রয়েছে এবং প্রতি হাজারে গড়ে ৩ থেকে ৫ জন রোগী স্ট্রোকের শিকার হচ্ছে।

এছাড়া, নন কমিউনিকেবল ডিজিজ হিসেবে স্ট্রোক এখন দ্বিতীয় মৃত্যুর কারণ হিসেবে গণ্য হয় এবং যারা জীবিত থাকেন তারাও নানান শারীরিক প্রতিবন্ধিতায় ভুগেন বা ঝুঁকিতে থাকেন।

মস্তিষ্কের অভ্যন্তরীণ রক্তনালীগুলোর মধ্যে রক্ত সঞ্চালন কমে গেলে বা রক্তনালীতে চর্বি জমা হলে (মূলত থ্রম্বো এম্বোলিজমের কারণে হয়ে থাকে) তা ইস্কেমিক স্ট্রোক হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে, মস্তিষ্কের অভ্যন্তরীণ রক্তনালী ছিঁড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হলে ও আক্রান্ত স্থানের টিস্যুগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করলে তাকে হেমোরেজিক স্ট্রোক বলা হয়। এটি রোগীর বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

স্ট্রোকের উপসর্গ

ইস্কেমিক ও হেমোরেজিক উভয়েরই স্ট্রোকের উপসর্গই এক, যা প্রাথমিকভাবে পার্থক্য করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। শরীরের এক পাশে ঝিম ঝিম করা বা অবশ মনে হওয়া, দুর্বল অনুভব করা, হঠাৎ করে জ্ঞান হারিয়ে ফেলা, মুখ বেঁকে যাওয়া বা আক্রান্ত পাশের হাত-পা নাড়াতে সমস্যা হওয়া ইত্যাদি উভয় স্ট্রোকেরই প্রাথমিক কিছু উপসর্গ। এমতাবস্থায় তাই রোগ নির্ণয়ের জন্য সিটি স্ক্যান বা এমআরআই করা অতিব জরুরি। কারণ উপসর্গ এক হলেও দুই রোগের চিকিৎসা সম্পূর্ণ ভিন্ন।

ইস্কেমিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে মেডিসিন বা সার্জারির মাধ্যমে রোগীর মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক বা বৃদ্ধি করা যেতে পারে। তবে হোমোরেজিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে রক্ত জমাট ভাঙার জন্য অপারেশনের প্রয়োজন পড়তে পারে। রিহ্যাবিলিটেশন চিকিৎসার ক্ষেত্রে যেমন রোগীর ফিজিক্যাল বিহ্যাবিলিটেশন প্রয়োজন, তেমনই প্রয়োজন অকুপেশনাল রিহ্যাবিলিটেশন।

আবার অনেক সময় দেখা যায় রোগীর কথা বলতে অসুবিধা দেখা দেয়, যা মেডিকেল পরিভাষার এফাশিয়া হিসেবে পরিচিত। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ রিহ্যাবিলিটেশন। রিহ্যাবিলিটেশন চিকিৎসা মাল্টিডিসিপ্লিনারি টিমের তত্ত্বাবধায়নে হওয়া উচিৎ, যা রোগীর সার্বিক অবস্থা ও অসুবিধা অনুযায়ী উপকারী এবং এর মাধ্যমে রোগীর দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

স্ট্রোকের কারণে রোগী অজ্ঞান হয়ে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে রোগীর শ্বাসনালি, শ্বাস-প্রশ্বাস ও রক্ত সঞ্চালন সচল রাখার (সিপিআর থেরাপি এক্ষেত্রে বিশেষ কার্যকরী) চেষ্টা করতে হবে। রোগীকে একদিকে কাত করেবালিশ ছাড়া মাথা নিচু করে শোয়াতে হবে। চোখ ও চোখের প্রতিক্রিয়া বা সংকেতের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। মূত্রথলির যত্ন নিতে হবে ও প্রয়োজনে ক্যাথেটার ব্যবহার করতে হবে। স্ট্রোকের রোগীর দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ফিজিওথেরাপি অন্যতম সেরা সমাধান।

যথাযথ পর্যবেক্ষণ এবং সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে, জটিলতার ঝুঁকি ছাড়াই স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব। তবে কেউ যেন স্ট্রোক আক্রান্ত হয়ে জীবন ঝুঁকিতে না পড়ে সেই বিষয়েও বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। একদিকে যেমন যথা সম্ভব নিজেকে দুশ্চিন্তামুক্ত রাখা প্রয়োজন, অন্যদিকে পরিবার-পরিজন, বন্ধু-আত্মীয়দের উচিৎ সর্বদা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ব্যক্তির পাশে থাকা। ভয় নয়, সচেতনতাই বাঁচাতে পারে জীবন।

 

ডা. মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন
কনসালটেন্ট, নিউরোলজি বিভাগ
এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম