বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর জুন মাস ক্যান্সার সারভাইভার মাস হিসেবে পালিত হয়। এবছরও বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে মাসটি। এ মাসের তাৎপর্য তুলে ধরতে এবং প্রাথমিক রোগ-নির্ণয় নিশ্চিতের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এভারকেয়ার হসপিটাল, চট্টগ্রাম ক্যান্সার সারভাইভার ফোরাম গতকাল বুধবার উদ্বোধন করেছে।
আয়োজনে অতিথি ছিলেন সানশাইন এডুকেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সাফিয়া গাজী রহমান। উপস্থিত ছিলেন এভারকেয়ার হসপিটাল, চট্টগ্রামের মহাব্যবস্থাপক ডা. ফজলে আকবর, অনকোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর, অনকোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. সাজ্জাদ মোহাম্মদ ইউসুফ প্রমুখ। পেশেন্ট ফোরামে চিকিৎসকবৃন্দ ক্যান্সারের বিভিন্ন সম্পর্কে মতবিনিময় করেন। এতে ক্যান্সার সারভাইভাররা তাদের জীবনের অভিজ্ঞতা ও এর থেকে উত্তোরণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
অধ্যক্ষ সাফিয়া গাজী রহমান বলেন, ক্যান্সার নিয়ে আমাদের আরও বেশি সচেতন হতে হবে। শরীরের যে কোনো পরিবর্তন মনে হলে তা গুরুত্ব দিয়ে খেয়াল করতে হবে। আমাদের সবসময় ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে চলতে হবে। আমরা ইচ্ছা করলেই জয়ী হতে পারবো। আমরা হেরে যেতে চাই না। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারিভাবে এভারকেয়ার হাসপাতালের এমন উদ্যোগের প্রশংসাও করেন তিনি।
ডা. সাজ্জাদ মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, প্রায় ৯০% ক্যান্সার ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশগত কারণে হয়ে থাকে এবং বাকি ১০% হয় বংশানুক্রমে। অর্থাৎ, জিনের মাধ্যমে এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে ক্যান্সার হতে পারে। শুরুর দিকে ক্যান্সারের উপসর্গগুলো সনাক্ত করা খুব একটা সহজ নয়, যা এই রোগকে মরণব্যাধিতে রূপান্তরিত করেছে। তাই আমাদের সকলের উচিত সতর্ক থাকা, সচেতন থাকা, নিয়মিত চেকআপ করা এবং অস্বাভাবিক ও অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা পরিত্যাগ করা।
ডা. ফজলে আকবর বলেন, বয়স্ক পুরুষদের প্রস্টেট ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য ‘পিএসএ’, ট্রান্সর্যাক্টর আল্ট্রাসনোগ্রাফি ইত্যাদি এবং নারীদের স্তন ও জরায়ুর ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য ম্যামোগ্রাফি ও প্যাপ স্মিয়ার পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। পাশাপাশি উন্নতমানের ডায়াগনস্টিক, হিস্টোপ্যাথলজি সুবিধাও প্রয়োজন হয়। এসবের মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার ও এর সঠিক স্থান নির্ণয় করা সম্ভব। এসব সুবিধাগুলো এভারকেয়ার হসপিটাল, চট্টগ্রামে আছে। আমরা আগামী ২/১ মাসের মধ্যেই রেডিয়েশন অনকোলজি চালু করতে যাচ্ছি, যা চট্টগ্রামবাসীর জন্য সুখবর।
ক্যান্সার সারভাইভার ফারহানা মুস্তাফা বলেন, দ্রুত ও সঠিক চিকিৎসাই পারে ক্যান্সার থেকে মুক্তি দিতে। বর্তমানে আমি সুস্থভাবে জীবনযাপন করছি এবং এর জন্য এভারকেয়ার হসপিটাল, চট্টগ্রামের ভূমিকা অনস্বীকার্য।