বিভিন্ন ধরনের ইমেজিং পরীক্ষা: কোনটি কেন এবং কখন?

আপনি কি কখনো এমআরআই, সিটি স্ক্যান বা আল্ট্রাসাউন্ড শব্দগুলো শুনেছেন? এই পরীক্ষাগুলোকে মিলিয়ে ইমেজিং পরীক্ষা বলা হয়। এই পরীক্ষাগুলোর মাধ্যমে আমাদের শরীরের ভিতরের অংশের ছবি তৈরি করা হয়। এই ছবি দেখে ডাক্তাররা আমাদের শরীরে কোনো সমস্যা আছে কি না তা বুঝতে পারেন।

বিভিন্ন ধরনের ইমেজিং পরীক্ষা

  • এক্স-রে (X-ray): এটি সবচেয়ে সাধারণ ধরনের ইমেজিং পরীক্ষা। এক্স-রে মেশিন থেকে এক ধরনের রশ্মি বের হয়, যা আমাদের শরীরের মধ্য দিয়ে গিয়ে একটি ফিল্মে ছবি তৈরি করে। এই ছবি দেখে ডাক্তাররা হাড় ভাঙা, ফুসফুসের সমস্যা ইত্যাদি চিনতে পারেন।
  • আল্ট্রাসাউন্ড: এই পরীক্ষায় শরীরের ভিতরে উচ্চ কম্পাঙ্কের শব্দ তরঙ্গ পাঠানো হয় এবং সেই তরঙ্গ ফিরে আসার সময় একটি ছবি তৈরি হয়। আল্ট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে গর্ভের বাচ্চার ছবি, কিডনি, লিভার ইত্যাদির ছবি তৈরি করা হয়।
  • সিটি স্ক্যান: এই পরীক্ষায় এক্স-রে মেশিনের মতো একটি মেশিনের মধ্য দিয়ে শরীরকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে একাধিক ছবি তৈরি করা হয়। এই ছবিগুলোকে কম্পিউটারের সাহায্যে একত্রিত করে ত্রিমাত্রিক ছবি তৈরি করা হয়। সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে মস্তিষ্ক, ফুসফুস, পেট ইত্যাদির বিস্তারিত ছবি তৈরি করা যায়।
  • এমআরআই: এই পরীক্ষায় শক্তিশালী চুম্বকের মাধ্যমে শরীরের ভিতরের অংশের ছবি তৈরি করা হয়। এমআরআই সিটি স্ক্যানের চেয়ে আরো বিস্তারিত ছবি তৈরি করতে পারে এবং এটি শরীরের নরম অংশের ছবি তৈরি করতে খুবই উপযোগী।

কোন পরীক্ষা কেন এবং কখন করা হয়?

  • হাড় ভাঙা: হাড় ভাঙা বা চিড় ধরলে এক্স-রে করা হয়।
  • ফুসফুসের সমস্যা: কাশি, জ্বর ইত্যাদি সমস্যায় ফুসফুসের এক্স-রে করা হয়।
  • গর্ভাবস্থা: গর্ভাবস্থায় বাচ্চার বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করতে, বাচ্চার অবস্থা জানতে আল্ট্রাসাউন্ড করা হয়।
  • মস্তিষ্কের সমস্যা: মাথা ব্যথা, চোখে অন্ধকার দেখা, মাথা ঘোরা ইত্যাদি সমস্যায় সিটি স্ক্যান বা এমআরআই করা হয়।
  • ক্যান্সার: ক্যান্সারের ধরন এবং এর বিস্তার জানতে সিটি স্ক্যান বা এমআরআই করা হয়।
  • হৃদরোগ: হৃদয়ের সমস্যা যেমন হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ভাল্ভের সমস্যা ইত্যাদি নির্ণয় করতে আল্ট্রাসাউন্ড বা সিটি স্ক্যান করা হয়।
  • পেটের সমস্যা: পেটে ব্যথা, অম্বল ইত্যাদি সমস্যায় আল্ট্রাসাউন্ড বা সিটি স্ক্যান করা হয়।

কোন পরীক্ষাটি আপনার জন্য উপযুক্ত?

কোন পরীক্ষাটি আপনার জন্য উপযুক্ত তা আপনার ডাক্তারই নির্ধারণ করবেন। ডাক্তার আপনার লক্ষণ, রোগের ইতিহাস এবং অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করে কোন পরীক্ষাটি করা উচিত তা নির্ধারণ করবেন।

মনে রাখবেন: ইমেজিং পরীক্ষাগুলো নিরাপদ। তবে কিছু ক্ষেত্রে, যেমন গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে, কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। তাই কোনো ইমেজিং পরীক্ষা করার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।

উপসংহার:

ইমেজিং পরীক্ষাগুলো আমাদের শরীরের ভিতরের অংশের ছবি তৈরি করে, যা ডাক্তারদের রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করে। বিভিন্ন ধরনের রোগের জন্য বিভিন্ন ধরনের ইমেজিং পরীক্ষা করা হয়। তাই কোন পরীক্ষাটি আপনার জন্য উপযুক্ত তা আপনার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী করুন।

আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করি!