হৃদপিণ্ডের ভালভগুলি হল এক ধরনের ভালভ যা রক্তকে এক দিকে প্রবাহিত হতে দেয় এবং অন্য দিকে ফিরে আসতে বাধা দেয়। যখন এই ভালভগুলি সঠিকভাবে কাজ করতে ব্যর্থ হয়, তখন তাকে ভালভ রোগ বলা হয়।
ভালভ রোগের প্রকারভেদ
ভালভ রোগ মূলত দুই ধরনের হয়:
- স্টেনোসিস: এই অবস্থায় ভালভ খুব শক্ত হয়ে যায় এবং রক্ত স্বাভাবিকভাবে প্রবাহিত হতে পারে না।
- রিগারজিটেশন: এই অবস্থায় ভালভ ঠিকভাবে বন্ধ হয় না এবং রক্ত পিছিয়ে যায়।
ভালভ রোগের কারণ
ভালভ রোগের অনেক কারণ থাকতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে:
- জন্মগত ত্রুটি: কিছু মানুষ জন্ম থেকেই ভালভ রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে।
- রিউম্যাটিক জ্বর: এই সংক্রমণ ভালভকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
- ধমনী শক্ত হওয়া: ধমনী শক্ত হওয়া হৃদপিণ্ডের ভালভকেও প্রভাবিত করতে পারে।
- বয়স: বয়স বাড়ার সাথে সাথে ভালভ রোগের ঝুঁকিও বাড়তে পারে।
- ইনফেকশন: হৃদপিণ্ডের ভালভে সংক্রমণ হলে ভালভ রোগ হতে পারে।
- সংযোজী কলা রোগ: লুপাসের মতো সংযোজী কলা রোগ ভালভকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
ভালভ রোগের লক্ষণ
ভালভ রোগের লক্ষণ রোগীর বয়স, ভালভ রোগের ধরন এবং রোগের তীব্রতার উপর নির্ভর করে। কিছু লোকের কোনো লক্ষণ নাও থাকতে পারে। সাধারণত দেখা যায়:
- বুকে ব্যথা: শারীরিক পরিশ্রম করার সময় বুকে ব্যথা হতে পারে।
- শ্বাসকষ্ট: শুয়ে থাকার সময় বা শারীরিক পরিশ্রম করার সময় শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
- ক্লান্তি: সহজেই ক্লান্তি অনুভূত হয়।
- ধড়ফড়: হৃদস্পন্দন অনিয়মিত হতে পারে।
- পায়ে ফোলা: পায়ে ফোলা ভাব দেখা দিতে পারে।
- মাথা ঘোরা: মাঝে মধ্যে মাথা ঘোরা অনুভূত হতে পারে।
ভালভ রোগের চিকিৎসা
ভালভ রোগের চিকিৎসা রোগীর অবস্থার উপর নির্ভর করে। কিছু ক্ষেত্রে ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সার্জারির প্রয়োজন হয়। সার্জারির মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত ভালভকে মেরামত করা হয় অথবা নতুন ভালভ প্রতিস্থাপন করা হয়।
ভালভ রোগের জটিলতা
যদি ভালভ রোগের চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে, যেমন:
- হৃদপিণ্ড ব্যর্থতা: হৃদপিণ্ড কাজ করতে অক্ষম হয়ে পড়তে পারে।
- স্ট্রোক: মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার কারণে স্ট্রোক হতে পারে।
- হঠাৎ মৃত্যু: হৃদপিণ্ডের গতি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা
- নিয়মিত চেকআপ: যদি আপনার পরিবারে ভালভ রোগের ইতিহাস থাকে বা আপনার কোনো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
- স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন: স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং ধূমপান না করা ভালভ রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- ওষুধ সেবন: যদি ডাক্তার কোনো ওষুধ নির্ধারণ করেন, তাহলে সেগুলি নিয়মিত সেবন করুন।
ভালভ রোগ একটি গুরুতর সমস্যা। তাই যদি আপনার কোনো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।