মাসিক হল একটি স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া, যা প্রতিটি নারীর জীবনেই ঘটে। এই সময় শরীরের বিশেষ যত্ন নেওয়া জরুরি। মাসিক চলাকালীন পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখলে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ থেকে বাঁচা যায় এবং স্বাস্থ্যকর থাকা যায়।
কেন মাসিক চলাকালীন পরিচ্ছন্নতা গুরুত্বপূর্ণ?
- সংক্রমণ প্রতিরোধ: মাসিক চলাকালীন যোনিপথের pH লেভেল পরিবর্তিত হয় এবং এটি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের জন্য আরও সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা এই ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- অস্বস্তি কমানো: পরিচ্ছন্ন না থাকলে চুলকানি, জ্বালাপোড়া এবং দুর্গন্ধের সমস্যা হতে পারে।
- আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি: পরিচ্ছন্ন থাকলে মানসিকভাবে আরামদায়ক অনুভূতি হয় এবং আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়।
মাসিক চলাকালীন পরিচ্ছন্নতার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ
- স্যানিটারি ন্যাপকিন বা ট্যাম্পন নিয়মিত পরিবর্তন করুন: প্রতি ৪-৬ ঘণ্টা অন্তর স্যানিটারি ন্যাপকিন বা ট্যাম্পন পরিবর্তন করা উচিত।
- পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন: মলদ্বার থেকে যোনির দিকে একবারই ধুয়ে ফেলুন। সাবান ব্যবহার করলে অ্যালো-ভেরা বা অলিভ অয়েলযুক্ত মাইল্ড সাবান ব্যবহার করুন।
- কাপড়ের পরিচ্ছন্নতা: মাসিকের সময় ব্যবহৃত কাপড় পৃথক করে গরম পানিতে সাবান দিয়ে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিন।
- সঠিক পোশাক: তুলার তৈরি লুজ ফিটিং প্যান্টি পরুন। টাইট ফিটিং প্যান্টি ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।
- সাধারণ স্পর্শ এড়িয়ে চলুন: মাসিক চলাকালীন যোনিপথে হাত বা অন্য কোনো জিনিস ঢুকানো থেকে বিরত থাকুন।
- স্বাস্থ্যকর খাদ্য: পুষ্টিকর খাবার খান এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।
- ব্যায়াম: নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন।
- ডাক্তারের পরামর্শ: যদি কোনো অস্বস্তি বা সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
মাসিক চলাকালীন কিছু ভুল ধারণা
- গোসল করা উচিত নয়: মাসিক চলাকালীন গোসল করা নিরাপদ। শুধু মনে রাখবেন যোনিপথে সাবানের পরিমাণ কম রাখতে হবে।
- সাঁতার কাটা যাবে না: সাঁতার কাটা যাবে, তবে পাবলিক সুইমিং পুল এড়িয়ে চলা ভালো।
- যৌন সম্পর্ক করা উচিত নয়: মাসিক চলাকালীন যৌন সম্পর্ক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
মাসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা
মাসিক হল একটি স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া। এই সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকলে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করা সম্ভব। মাসিক সম্পর্কে কোনো ধরনের লজ্জা বা অস্বস্তি বোধ করা উচিত নয়।
মনে রাখবেন: মাসিক চলাকালীন পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোনো ধরনের সমস্যা হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।