শিশুদের মধ্যে অ্যাপেন্ডিসাইটিস একটি সাধারণ সমস্যা। এটি একটি ছোট, আঙুলের মতো আকৃতির অঙ্গ, অ্যাপেন্ডিক্সের প্রদাহ। যদি এটি দ্রুত চিকিৎসা না করা হয়, তবে এটি ফেটে যেতে পারে এবং গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
লক্ষণ:
শিশুদের অ্যাপেন্ডিসাইটিসের লক্ষণ প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় নির্ণয় করা কঠিন হতে পারে, কারণ শিশুরা তাদের ব্যথা সঠিকভাবে বর্ণনা করতে পারে না। তবে, সাধারণত নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি দেখা যায়:
- পেটে ব্যথা: সাধারণত নাভির কাছে শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে পেটের ডান দিকে স্থানান্তরিত হয়।
- বমি বমি ভাব এবং বমি: ব্যথার সাথে বমি বমি ভাব এবং বমি হতে পারে।
- জ্বর: হালকা জ্বর হতে পারে।
- ক্ষুধামান্দ্য: খাবার খেতে ইচ্ছা না করা।
- পেট ফাঁপা: গ্যাস জমে পেট ফুলে থাকতে পারে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া: কখনও কখনও কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া হতে পারে।
কারণ:
অ্যাপেন্ডিসাইটিসের সঠিক কারণ এখনও অজানা। তবে, মনে করা হয় যে অ্যাপেন্ডিক্সের মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে সংক্রমণ হয় এবং প্রদাহ শুরু হয়।
নির্ণয়:
ডাক্তার শিশুর শারীরিক পরীক্ষা করবেন এবং পেটে চাপ দিয়ে ব্যথা হচ্ছে কিনা তা পরীক্ষা করবেন। প্রয়োজনীয় পরীক্ষাগুলি হল:
- রক্ত পরীক্ষা: সংক্রমণের সন্ধানে।
- মূত্র পরীক্ষা: মূত্রনালীর সংক্রমণের লক্ষণগুলি অ্যাপেন্ডিসাইটিসের মতো হতে পারে, তাই মূত্র পরীক্ষা করে এই সম্ভাবনা বাদ দেওয়া হয়।
- আল্ট্রাসাউন্ড: অ্যাপেন্ডিক্সের অবস্থা পরীক্ষা করতে।
- সিটি স্ক্যান: জটিল ক্ষেত্রে, অ্যাপেন্ডিক্সের অবস্থা আরও স্পষ্টভাবে দেখতে।
চিকিৎসা:
অ্যাপেন্ডিসাইটিসের একমাত্র চিকিৎসা হল অস্ত্রোপচার। অস্ত্রোপচারে অ্যাপেন্ডিক্সকে অপসারণ করা হয়। আজকাল, অধিকাংশ ক্ষেত্রে ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, যা একটি ছোট ছিদ্র দিয়ে করা হয়।
জটিলতা:
যদি অ্যাপেন্ডিসাইটিস দ্রুত চিকিৎসা না করা হয়, তবে নিম্নলিখিত জটিলতা দেখা দিতে পারে:
- ফেটে যাওয়া: অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে গেলে পেটের ভিতরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
- পেরিটোনিটিস: পেটের আস্তরণের প্রদাহ।
- এবসেস: পুঁজ জমে ফোঁড়া হতে পারে।
প্রতিরোধ:
অ্যাপেন্ডিসাইটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। তবে, যদি আপনার শিশু পেটে ব্যথা অনুভব করে, তাহলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
উপসংহার:
শিশুদের অ্যাপেন্ডিসাইটিস একটি গুরুতর সমস্যা। যদি আপনার শিশু উপরের কোনো লক্ষণ দেখায়, তাহলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। যত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা করা হবে, তত তাড়াতাড়ি শিশু সুস্থ হয়ে উঠবে।